বিডি ২৪ নিউজ রিপোর্ট: বর্তমান সময়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুর্নীতিবাজ সাব রেজিস্ট্রারদের মধ্যে অন্যতম মাগুরা কন্যা সাব রেজিস্ট্রার আমিনা বেগম। ঘুষ দূর্নীতি আর জাল দলিল বাণিজ্যের মাস্টারমাইন্ড আমেনা ইতোমধ্যে নামে বেনামে গড়েছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। তিনি যখন যেখানে কর্মরত ছিলেন সেখানেই তার অবৈধ চাহিদা ঘুষ দূর্নীতি, রাজস্ব ফাঁকি, পে অর্ডারের টাকা লোপাট, কথায় কথায় জমির শ্রেণী পরিবর্তন, ভলিউমে কাঁটাছেড়া, ওভার রাইটিং আর সাধারণ জমি দাতা গ্রহীতাকে ব্লাকমেইলিং করে টাকা হাতানোর বিষয়গুলো সবসময় হয়েছে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ গণমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম।
ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া যশোর সবখানেই তিনি ঘুষ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড, বাদবাকি সব হুকুমের গোলাম।আমেনা বেগম মাগুরার সাবেক এমপি সাইফুজ্জামান শেখর ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারের প্রিয়জন পরিচয়ে এবং নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী পরিচয় দিয়ে নিজস্ব ক্ষমতার বলয় সৃষ্টি করে তার কর্মস্থলে গড়ে তুলেন শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট। তার সিন্ডিকেট যুক্ত থাকে অফিস স্টাফ, কতিপয় দলিল লেখক সমিতির নেতা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির কতিপয় রাজনৈতিক নেতা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাগুরার একজন শীর্ষ সাংবাদিক নেতা বললেন ” আমেনা বেগমের সব খবরই আমাদের কানে আসে, তাঁর ঠিকুজিকোষ্ঠীও আমাদের মুখস্থ, ইচ্ছে করলেই আমরা হার্ড লাইনে যেতে পারতাম কিন্তু মাগুরার মেয়ে হিসেবে আমি এবং আমার মাগুরার সাংবাদিকবৃন্দ সবকিছু ওভার লুক করে আসছে “। কিন্তু আমেনা বেগমের ঘুষ দুর্নীতি আর অবৈধ টাকার নেশার খবরে মাগুরার সাংবাদিকবৃন্দ ত্যক্ত বিরক্ত। সে প্রতিনিয়ত “”মাগুরার মুখে চুনকালি মাখাচ্ছে””। তিনি আরও বলেন “” আমাদের আমেনা একজন ২৮ তম বিসিএস ক্যাডার, উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী মানুষ, সে ইচ্ছে করলে ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা পুলিশ অফিসার হিসেবে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারতো””। তবে আমেনা সেটি করেনি। তাই আমরা বিশ্বাস করি “” খুব সহজে দ্রুত শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার জন্য আমেনা এই সাব রেজিস্ট্রারের চাকরি বেছে নিয়েছে “”।
সাব- রেজিস্টার আমিনা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনে তদন্ত শুরু করেছে ঝিনাইদহ ও যশোর দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ দুদক কার্যালয় থেকে তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তালিকা প্রস্তুত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের সদর দপ্তরে। তবে তার বিরুদ্ধে তেমন স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়।
ইতোমধ্যে আমেনা বেগম হয়েছেন শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক। তিনি তার কার্যালয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী ও ঘুষ আদায়ের জন্য আলাদা সিন্ডিকেটকে মৌখিক নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। তিনি নিজেকে মহাক্ষমতাধর আইজিআর এর সমতুল্য কর্মকর্তা মনে করেন। তিনি সচরাচর কারো সাথে কোন বিষয়ে কথা বলতে চান না। কোন পরামর্শ বা সাজেশন থাকলে তার কথিত সহকারী, মোহরার, পিয়ন বা ঝাড়ুদার দিয়ে সমাধান করার অপচেষ্টা করেন।
পুনশ্চঃ বিতর্কিত সাব রেজিস্ট্রার ও ঘুষ দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড আমিনা বেগম ১৯৭৮ সালের ১১ই এপ্রিল মাগুরায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোটোবেলা থেকেই তিনি ছিলেন প্রচণ্ড মেধাবী। তিনি শিক্ষাজীবনে বিএ অনার্স ও এমএ পাশ করে সাব রেজিস্ট্রার পদে চাকরির জন্য আবেদন করেন।
২০১১ সালের ২১শে মার্চ আমিনা সাব রেজিস্ট্রার পদো মনোনীত হন। চাকরিজীবনে তার প্রথম পদায়ন তার নিজ জেলা মাগুরার শ্রীপুর সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে। এরপর একে একে মাগুরার মোহাম্মদপুর, খুলনার ফুলতলা, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ, ঝিনাইদহ সদর ও কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২০শে ডিসেম্বর ২০২৩ নিবন্ধন অধিদপ্তরের এক বদলি আদেশে তাকে যশোর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে প্রেরণ করা হয়।
সব অফিসেই আমিনা বেগমের ঘুষ দুর্নীতি আর লুটপাট বাণিজ্যের কারণে আমজনতা হচ্ছে বলিরপাঁঠা।
BRSA ( বাংলাদেশ রেজিষ্ট্রেশন সার্ভিস এসোসিয়েশন) এর একজন অন্যতম শীর্ষ নেতা বললেন, আমিনা বেগমের অবসরে যাওয়ার নির্ধারিত তারিখ ২০৩৭ সালের ১০ই এপ্রিল নির্ধারিত থাকলেও হয়তো তার আগেও সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে তার চাকরির যবনিকাপাত হতে পারে।
সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669 / 01712596354
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Bd24news.com