বিডি ২৪ অনলাইন নিউজ: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘জুলাই সনদের ক্ষেত্রে যদি এমন হয় তাহলে কিছুদিন পরে দেখা যাবে অভ্যুত্থানটাই নাই। আবার কিছুদিন পরে দেখা যাবে এই অভ্যুত্থানের যারা যোদ্ধা ছিল, রাজপথে নেমেছিল তাদেরকে বিভিন্ন কায়দায় অভিযুক্ত করে একেকজনকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দেওয়া হবে। বিভিন্নভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট এলাকায় তিনি এসব কথা বলেন।
শহিদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রী কলেজ মাঠে টুনিরহাট জুনিয়র ফুটবল একাডেমী আয়োজিত গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের চতুর্থ দিনের খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সারজিস আলম।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে, তারা এই কাজগুলোই করবে, আজকে থেকে পাঁচ, দশ, পনের বছর পর। আমাদের ওই জায়গাটা স্পষ্ট লাগবে। তখনি আমরা আমাদের এই জুলাই সনদে স্বাক্ষর বা এই কথাটা চিন্তা করব। যেহেতু অর্ন্তবর্তী সরকার আবারো দায়সারা ভাব দেখিয়েছে। এজন্য আমরা সেখানে অংশগ্রহণ করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে এমন একটি অবস্থা যে নামকাওয়াস্তে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিকে যেতে পারলেই হইলো। এতে কোনো সংস্কার হোক আর না হোক, জুলাই সনদের কোনো আইনিভিত্তি থাকুক আর নাই থাকুক, পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এসে সেটা বাস্তবায়ন করুক, আর নাই করুক, তাদের কাজ কোনোমতে স্বাক্ষরটা হয়ে যেতে পারলেই হইলো। তাদের কাছে নতুন কিছু চাইনি যে, এই দাবি আমাদেরকে আবার নতুন করে দিতে হবে। তারা ঐকমত্য কমিশনে একমত হয়েছে যেই দাবিগুলো আমরা চেয়েছি, এটা একদম ক্লিয়ার আইনিভিত্তি।’
এনসিপির এই মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘অর্ন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা গতকাল (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা কোনো রেসপন্স করেননি। আমরা আমাদের জায়গা থেকে একদম স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছি। আমাদের আহ্বায়ক আগেই বলেছিলেন, আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি ৫ আগষ্টের পর থেকে। ঘোষণা পত্রেও ছাড় দিয়েছি। কিন্তু দেখেন ওই ঘোষণা কী? নামকাওয়াস্তে একটা রিটেন পেপার হয়ে বসে আছে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে কোনো কার্যকারিতা দেখছি না।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে সারজিস বলেন, ‘বিএনপি তাদের জায়গা থেকে কিন্তু বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়, ৬-৭টা জায়গায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’ (ভিন্নমত) দিয়ে রেখেছে। এগুলো এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, যেগুলোতে দেয়নি এরকম ৫০টা না হয়ে ৫টা হওয়া বেশি প্রয়োজনীয়। এইটাতো এই অর্ন্তবর্তী সরকারকে ক্লিয়ার করতে হবে, যে গণভোটে জুলাই সনদের পক্ষে রায় যায়। তাহলে ওই নোট অব ডিসেন্টগুলোর কার্যকারিতা থাকবে কি না। তখন তো এটা থাকার প্রশ্নই আসে না। ধরেন কোনো একটা দল ক্ষমতায় এসে তখন যদি বলে, এই এই বিষয়ে আমাদের তো নোট অব ডিসেন্ট ছিল; আমরা এগুলো বাস্তবায়ন করব না। সেক্ষেত্রে অবস্থানটা কী হবে, আইনি ভিত্তিটা কী হবে, ব্যবস্থাটা কী হবে? এগুলোর কোনো কিছু ক্লিয়ার করা হয় নাই।’
‘এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটা যখন ক্লিয়ার করা হবে না এবং এটা আসলে এই সনদটা আমরা আমাদের জায়গা থেকে চেয়েছি যে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশটা জারি করবেন। আমরা ওই ফ্যাসিস্ট সরকারের রাষ্ট্রপতি থেকে ওই আদেশটা জারি করা কখনো এগ্রি করি না। এজন্য আমরা খুবই যৌক্তিক যেগুলো একদিনের মধ্যে ডিক্লিয়ারেশন দিয়ে বা একটা ঘোষণা দিয়ে ক্লিয়ার করা যায় মানুষের সামনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমত এই অর্ন্তবর্তী সরকার জুলাই সনদ সাক্ষর করবে, সেখানে এনসিপির কথা বাদই দিলাম। সেখানে তো প্রধান অতিথিদের কাতারে বা সামনের সারিতে জুলাই যোদ্ধা, শহিদ পরিবার তাদেরই থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম এটা রাজনৈতিক দলের একটা চুক্তির মতো, যেমন মিলনমেলা হয়। ওই রকম মিলনমেলা হয়েছে। না এখানে কোনো জুলাই যোদ্ধা কিংবা শহিদ পরিবারগুলোর কোনো আসন আছে, না কোনো ব্যবস্থা আছে। এমন একটা পরিস্থিতিতে তাদের যদি কোনো ক্ষোভ তৈরি হয়। ওই ক্ষোভের প্রকাশ আমার মনে হচ্ছে সেখানে দেখিয়েছে তারা। এটা কিন্তু অর্ন্তবর্তী সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে হোক বলেন, আর নিজেরাই বলেন, অন্যভাবে ডিল করতে পারত। কিন্ত তারা যেভাবে সেখানে লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারশেল ছুড়েছে, রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। এগুলো আসলে খুবই অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক।’
সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669 / 01712596354
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Bd24news.com