অনলাইন নিউজ : সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দোসর প্রভাবশালী নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারিতে রয়েছে। তার অবৈধ সম্পদের তালিকা সরকারের বিশেষ একটি সংস্থার হাতে। তাকে দুদক কেন আইনের আওতায় আনছে না তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চলছে। তবে দুদক সূত্র বলছে, অনেকের অভিযোগ আমলে নেয়া হয়েছে। ক্রমান্বয়ে তিনি যদি দুর্নীতি করে থাকে দুদকের জালে আটকা পড়বেই। পতিত সরকারের আমলে সংজ্ঞবদ্ধ এই চক্র সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন। তার অবৈধ সম্পদের খবর খোদ দুদকের কাছেও নেই। শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার বর্তমানে ধরাছোঁয়ার বাইরে। অন্তর্র্বতী সরকারের উপদেষ্টার দপ্তর থেকে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে গড়িমসি করায় তিনি আয়েশি জীবনযাপন করছেন।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর আমান উল্লাহ সরকার তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধবদের সামনে ভোল পাল্টে নিজেকে বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত বলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন শুরুমাত্র পূর্বের সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য, তিনি তার ঘনিষ্ঠজমদের বলেন যে, ব্রাম্মনবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার দক্ষিণ লক্ষীপুর গ্রামে তার বাড়ী। বাবা মিজানুর রহমান সরকার, মা আছিয়া বেগম। তার পরিবারের সবাই নাকি জামায়াত ও বিএনপির রাজনীতিতে সম্পৃক্ত। বুয়েটে ডাঃ এম এ রশিদ হলের কক্ষ নং ১০১১ তে পড়াকালীন তিনি ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ছিলেন বলে প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। এমনকি সরকারের পট পরিবর্তনের সাথে সাথে তিনি এখন বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে অধিদপ্তরে রিউমার চালু করতে নানা ধরনের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। সুচতুর আমান উল্লাহ সরকার পিঠ বাঁচানোর অপকৌশল বেশ ভালোভাবেই রপ্ত করেছেন তবে এতোকিছু করেও শেষরক্ষা হবেনা আমানের তার চাকুরীকালীন সমায়ের সকল কর্মকাণ্ডের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর তদন্ত করলেই কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে বলে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্ভরশীল একটি সুত্রের দাবি। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং ম, মুক্তাদির চৌধুরীর আমলের আমান উল্লাহ সরকার এর দায়িত্ব থাকা প্রকল্পের প্রাক্কলন ও কাজের বাজেট ও বাস্তবায়ন খরচের হিসাব নিকাশ করলে ভোল পাল্টানো নব্য বিএনপির পরিচয়দাবকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার এর অনেক অনিয়ম ধরা পড়বে বলে গণপূর্তের সংশ্লিষ্ট সুত্রের দাবি!!
নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার টেন্ডার বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য আগের চেয়ে বেপরোয়াভাবেই চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তিনি ঢাকার বাইরে বদলি হয়েছে। তিনি অসুস্থতার সাটিফিকেট, পারিবারিক সমস্যা দেখিয়ে ছুটি কাটাচ্ছেন। গণপূর্ত অধিদপ্তর এখনো আওয়ামীপন্থী নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকারের কব্জায়। কাজের জন্য ঠিকাদারদের কাছ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার টাকা নিয়ে কাজ দেয়নি এমন অভিযোগ ভুরি ভুরি। সূত্র মতে, দুদক কর্মকর্তারা জানান দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত আমান উল্লাহ সরকার কে একসময় বিচারের মুখোমুখি করা হবে। দুদকের ভয়ে তিনি কাজে নিয়মিত নন। এতে করে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে নিজ কর্মস্থল ঝালকাঠিতে। জানাগেছে তিনি ঝালকাঠি থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় আসতে তার নিজের অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যা উল্লেখ করেছেন। আমান উল্লাহ সরকার কাগজে কলমে হাজিরা ঠিক থাকলেও পূরো সপ্তাহ জুড়ে থাকেন গণপূর্ত অধিদপ্তরে। কাজের চেয়ে নিজেদের মিটিং নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান। বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি করে হয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার।
রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট ও বাড়ি করেছেন তিনি। এছাড়াও নবীনগরের তার গ্রামে প্রায় ২০০ একক জমি ক্রয় করেছেন। যার অনুমান দাম ৩০০ কোটি টাকা। সূত্রমতে, নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে কোটি কোটি টাকা জোগান দিয়েছেন। তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবি প্রধান হারুন উর রশিদ হারুন, এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম ও বিপ্লব কুমার সরকারকে অর্থের যোগান দিয়েছেন। অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা পড়েছে। দুদক অভিযোগ গুলো আমলে নিয়ে তদন্ত করছে বলে জানা গেছে।
অভিযোগে প্রকাশ, পতিত সরকারের আমলে দুর্নীতিতে সামনের সারিতে থাকা আমান উল্লাহ সরকারের বিরুদ্ধে তখন ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা, বরং তাকে পদোন্নতি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দাম্ভিকতা করে বলতেন যে তারা শেখ হাসিনার লোক তিনি। তার দুর্নীতি অনিয়ম নিয়ে লেখলে মামলার ভয় দেখানো হতো। এখনো একইভাবে চলছে তার ক্ষমতার দাপট। তিনি ইতিমধ্যে ভোল্ট পালটিয়ে বিএনপি পন্থী বনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে কয়েকজন নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডসহ দলীয়করণ ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তারা মনে করতেন নিজেরা চাকরি করেননা, সবাই রাজনৈতিক নেতা।
যারা বিগত সরকারের সময় সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন, তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। সূত্রমতে, এখানে যাদের হাতে ক্ষমতা থাকে তাদের ইচ্ছায় সব হয়। ছাত্র-জনতা হত্যার পাশাপাশি অনেকে দুর্নীতির সঙ্গেও জড়িত। তারা এখন প্রকৌশলী হওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। এর আগে গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার জি-কে শামীমের সঙ্গে সখ্য গড়ে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। দুর্নীতি অনিয়মের মাস্টারমাইন্ডরা হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাদের বেতনের সাথে আয়ের উৎস খোঁজ নিলে পাহাড় সমপরিমাণ সম্পদের হদিস মিলবে। স্ত্রী, সন্তান ও আত্নীয় স্বজনদের নামেও পাওয়া যাবে অঢেল সম্পদের খোঁজ। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দুর্নীতিবাজ আমান উল্লাহ সরকারের তালিকা হয়েছে। তাকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে গণপূর্তের দাপুটে প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার বিভিন্ন জায়গায় বদলি করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে আইনী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। নেয়া হয়নি তাদের পাহাড় সমপরিমাণ সম্পদের হিসাব। তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি। পতিত সরকারের সময়ে তিনি প্রকৌশলী নিজ অফিসে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিয়ে কমিশন বাণিজ্য করেছেন তারা এখনো বীরদর্পে আছেন। শুধুমাত্র এক জায়গা থেকে আরেক স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের চিহ্নিত কর্মকর্তা আমান উল্লাহ সরকার।
সে সুযোগ পেলে ছোবল দিবেই। এটা অন্তর্র্বতী সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে বলে বিজ্ঞমহল মনে করেন। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকারের স্বজনদের নামে ঠিকাদারী লাইসেন্স নিয়ে কাজ ভাগিয়ে নিয়েছেন। তিনি অনেক সময় ঘুপচি টেন্ডারের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতেন। এখনো একইভাবে চলছে। অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। তারা আরো জানান, অতীতে যারা সুবিধাবঞ্চিত ছিলেন তাদের অধিকাংশ এখন ভালো পজিশনে আছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ভোল্ট পালটানোদেরকে নিয়ে। গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকারের সম্পদের হিসাব বিবরণীতে গড়মিল রয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এক্ষেত্রে দুদকের অনুসন্ধান জরুরি বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669 / 01712596354
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Bd24news.com