মামুর রশীদ নোমানী : ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন কারণে সারা দেশের মানুষের আসা যাওয়া এ শহর বরিশালে। সেই সাথে প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে আসা যাওয়া তো আছেই। সরকার তাদের জনগণের সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রেরণ করলেও অনেকে এ জেলায় আসেন টাকা কামাতে, এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী অনেকের। বিশেষ করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তায় দিনরাত পরিশ্রম করলেও কিছু কিছু দপ্তরের কর্মকাণ্ড নগরবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এদের জন্য পুরো প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলছে সাধারণ মানুষ।
বরিশাল শহরে সবচে ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে অবৈধ যানবাহনের দৌরাত্ম্য। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ নগরবাসী। কিছুদিন পূর্বেও শহরের প্রধান সড়কে প্রবেশ করতে পারত না এই 'মিনি দানব' ইজিবাইক। বর্তমানে অবাধে পুরো শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে 'মিনি দানব' ইজিবাইক। ফলে প্রায় প্রতিদিনই একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে শহর ও শহরতলীতে। ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের দৌরাত্ম্যে সড়কে দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ইজিবাইকের স্ট্যান্ড তৈরি করে স্থানীয় নেতা ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিরও অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশের দাবি, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের মতো যানবাহনের কোনো কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। ইজিবাইকের ব্যাপারে সিটি করপোরেশনও নিশ্চুপ।
জানা গেছে, পুলিশের পক্ষ থেকে শহরে ইজিবাইক প্রবেশের ওপর মৌখিক নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হলেও টাকার বিনিময়ে অবাধে শহরে ঢুকছে। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন সড়কে পুলিশের চেকপোস্টও বসতে দেখা গেলেও এগুলোকে আইওয়াশ বলে মনে করছে নগরবাসী। আবার বেশকিছু ইজি বাইক কতিপয় পত্রিকার স্টিকার লাগিয়ে দেদারসে চলছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। গোটা শহরে ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশের সোর্স পরিচয়ধারী ব্যক্তি। এরা প্রশাসন ও কতিপয় রাজনৈতিক নেতাদের মাসোহারা দিয়ে অবাধে ইজিবাইক চালিয়ে পুরো শহরকে জিম্মি করে রেখেছে।
কয়েকজন ইজিবাইক চালক জানান, এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা করে মাসোহারা দিলে বরিশাল নগরীর যেকোনো এলাকায় প্রবেশ করা যায়। যেসব ইজিবাইকের মালিকরা মাসোহারা দেন, তাদের পত্রিকার নামে বিশেষ প্রেস লেখা স্টিকার ও টোকেন দেওয়া হয়। স্টিকার লাগানো ইজিবাইক পুলিশ আটকায় না। কিন্তু নিয়মিত মাসোহারার স্টিকার না থাকলে সেই ইজিবাইকগুলোকে আটকে জরিমানা আদায় করে ট্রাফিক পুলিশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরী জুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে ইজিবাইকের কারণে। একাধিক ট্রাফিক পুলিশ উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও দেদার ইজিবাইক প্রবেশ করছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালকদের ওপর জুলুম করা হচ্ছে। পুলিশি হয়রানি বন্ধ না হলে সামনের দিনে কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশাল জেলা সভাপতি প্রফেসর শাহ সাজেদা জানান, বরিশাল নগরীতে প্রয়োজনের তুলনায় কয়েকগুণ যানবাহন চলাচল করায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ না করায় দিন দিন সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সম্পাদক ও সিইও: মামুনুর রশীদ নোমানী ।
যোগাযোগ: ইমেইল: nomanibsl@gmail.com মোবাইল: 01713799669 / 01712596354
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত Bd24news.com