প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২২, ২০২৪, ২:২০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২৬, ২০২০, ৬:৫০ পূর্বাহ্ণ
যারা সড়ক পথে ভারত হয়ে নেপাল ভ্রমন করতে চান, তাদের জন্য ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি।
নিউজ ডেস্ক: পৃৃথিবী র সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের দেশ নেপাল। এভারেস্ট ছাড়াও এই দেশ ধারণ করে অন্নপূর্ণা, লোৎসে, কাঞ্চনজঙ্ঘা, মাকালু সহ বাঘা বাঘা সব পর্বতমালাকে। বাংলাদেশের আশেপাশে কম খরচে ঘুরে আসতে তিনটি দেশের নাম সবার প্রথমে মাথায় আসে, ভারত, ভুটান আর নেপাল। ভারত সরাসরি ট্যুরিস্ট ভিসা দেয়, তাই সড়ক ও আকাশপথের যেকোনো একটাতেই ভারত চলে যাওয়া সম্ভব। আকাশপথের পাশাপাশি ভারত হয়ে সড়কপথেও যাওয়া যায় ভুটান আর নেপালে। আকাশপথে খরচ একটু বেশি পড়ে আর নেপালের এয়ারপোর্টগুলোর অবস্থা বেশি ভালো না থাকায় অনেকেই চায় সড়কপথে ভারত হয়ে নেপাল ভ্রমণ করতে। সড়কপথে ভারত হয়ে নেপালে যেতে হলে ভারত হাইকমিশন থেকে যে ভিসাটি নিতে হয় তাকে বলা হয় “ট্রানজিট ভিসা”।
গত বছরের ডিসেম্বরে ভারত নেপালের জন্য শেষ ট্রানজিট ভিসা দিয়ে এই ভিসা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ইদানিং নতুন করে আবার দেয়া শুরু করেছে। তবে সেক্ষেত্রে অনুসরণ করতে হবে কিছু সুনির্দিষ্ট ধাপ। অনেকের ধারণা ভারত আর নেপালের জন্য ট্রানজিট ভিসা দেয় না, এই ধারণা ভুল। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করলে যে কেউ নেপাল যাওয়ার জন্য ভারতের ট্রানজিট ভিসা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। নেপালের জন্য ভারতীয় ট্রানজিট পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো আপনার পাসপোর্টে নেপালের ভিসা থাকতে হবে।আপনি নেপাল যাওয়ার মোটামুটি ২০ দিন আগে থেকে কাজ শুরু করুন।
প্রথমেই ঢাকা-বুড়িমারি-ঢাকার বাসের টিকেট কাটতে হবে। বুড়িমারির টিকেট কনফার্ম করে রিটার্ন টিকেট বুকিং দিয়েও টিকেট কাটা যায় যদি আপনি না জানেন ঠিক কবে ফিরবেন। তবে আসা এবং যাওয়ার দুটো টিকেটই আপনাকে দেখাতে হবে নেপাল এবং ভারত উভয় এম্বাসিতে।
টিকেট কাটা হয়ে গেলে পাসপোর্ট সাইজের এক কপি সদ্য তোলা ছবি,পাসপোর্ট, পাসপোর্ট এর ফটোকপি, বাসের টিকেটের ফটোকপি, আইডি কার্ডের ফটোকপি ( ছাত্রদের জন্য), জন্মনিবন্ধন/ জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি আর নেপাল এম্বাসির ওয়েবসাইট (www.nepembassy-dhaka.org/visa.html) থেকে ডাউনলোড করা পূরণকৃত ফর্ম নিয়ে চলে যান গুলশানস্থ নেপাল এম্বাসিতে। নতুন বাজারের আমেরিকান এম্বাসি হয়ে ঢুকে ভ্যাটিকান এম্বাসির ঠিক সামনেই নেপাল এম্বাসি অবস্থিত। ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা থাকলে নেপালের ভিসা পেতে কোনো সমস্যা হয় না। ৩০ দিন মেয়াদের এই ভিসা যদি প্রথমবারের মতো করা হয় তবে সার্কভুক্ত দেশের জন্য কোনো টাকা লাগে না। পরের বার থেকে ২,২০০ টাকা করে লাগে। সাধারণত পাসপোর্ট জমা দেয়ার একদিন পরেই নেপালের ভিসা দিয়ে দিবে।
নেপালের ভিসা হয়ে গেলে ভারতীয় এম্বাসির ওয়েবসাইট (https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa) এ গিয়ে এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করতে থাকুন। ভিসা টাইপ দিতে হবে “Transit”। পোর্ট অফ এন্ট্রি আর পোর্ট অফ এক্সিট দুটোই হবে “Chengrabanda/Raniganj”। ট্রানজিট ভিসার এপ্লিকেশন পূরণ করার সময় পিতামাতার “Previous Nationality” ঘরটা অবশ্যই পূরণ করতে হবে, যদিও এটা তারকা চিহ্নিত বক্স না। ভারত নেপাল বা ভুটানের জন্য ১৫ দিনের ট্রানজিট দেয়, সুতরাং ১৫ দিন অথবা ৩০ দিনের জন্য ভিসার আবেদন করুন।
“Purpose of visit” অপশনে “Tourism” সিলেক্ট করুন। “No. of Entry” তে Double, “After India” অপশনে Nepal, “Before India” অপশনে Nepal, এবং দুবারই Have Visa/Permit এ টিক চিহ্ন দিন। ভারতের শিলিগুড়ির কোনো হোটেলের ঠিকানা নেটে সার্চ দিয়ে “Address of Place of Stay” তে বসিয়ে দিন। “Expected Date of Journey” তে যেদিন বাংলাদেশ থেকে রওনা দিবেন তার পরের দিনের তারিখ বসিয়ে দিবেন। যেমন বাংলাদেশ থেকে যদি ২১ তারিখ রাতের বাস হয় বুড়িমারি পর্যন্ত তবে জার্নি ডেইট হবে ২২ তারিখ।
আপনার সকল তথ্য সঠিকভাবে দিয়ে ছবি আপ্লোড করে প্রিন্ট আউট করে নিন। ভারতীয় ট্রানজিট ভিসায় কোনো এপয়েন্টমেন্ট নেয়া লাগে না। তবে এক্ষেত্রে খুব জরুরী দুটো কাগজ লাগে সেটা হলো নেপালের হোটেল বুকিংয়ের কপি আর বুড়িমারি পর্যন্ত বাসের রিটার্ন টিকেটের কপি। নেপালের হোটেল বুকিং করা যাবে Booking.com থেকে। এই ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ আকারে বুকিং এর কপি ডাউনলোড করা যাবে।
এপ্লিকেশন ফর্ম পূরণ করা হয়ে গেলে প্রিন্ট আউট করে তার সাথে হোটেল বুকিংয়ের কপি, পাসপোর্ট, পাসপোর্টরে ফটোকপি, বাসের ২টি (যাওয়া+আসা) টিকেটের ফটোকপি, আইডি কার্ডের ফটোকপি (ছাত্রদের জন্য), জন্মনিবন্ধন/ জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি, ব্যাংক স্টেইটমেন্ট (১৫০ ডলার সমমূল্যের ব্যালেন্স বা ২০,০০০ টাকা ব্যাংক স্টেস্টমেন্ট থাকা জরুরী) আর ২”x২” সাইজের এক কপি সদ্য তোলা ছবি সংযুক্ত করে চলে যান ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার (IVAC) এ।আইভ্যাকে কখনোই ব্যাগ জাতীয় কিছু নিয়ে যাবেন না। আর বর্তমান চাজ সহ ভারতীয় ভিসা ফ্রি ৮২৪ টাকা (৮০০টাকা ভিসা ফ্রি এবং ২৪ টাকা চাজ), Bkash,Ucash,Master Card,Debit/Credit card দিয়ে pay করা যায়।
ট্রানজিট ভিসার আবেদনকারীদের জন্য আলাদা কোনো লাইন ধরতে হয় না।আবেদনপত্র জমা নিয়ে পাসপোর্ট উত্তোলনের সময়সূচী দিয়ে একটি ডেলিভারি স্লিপ দিবে। ওটা নিয়ে চলে আসুন। ডেলিভারি স্লিপের তারিখ অনুযায়ী ট্রানজিট ভিসার পাসপোর্ট খুবই কম দিতে দেখা গেছে। সাধারণত যাত্রার একদিন আগে বা যাত্রার দিন পাসপোর্ট পাওয়া যায়। তাই একমাত্র মোবাইলে মেসেজ আসলে তবেই পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে যাওয়া উচিত। আর যদি যাত্রার আগের দিনও মেসেজ না থাকে IVAC কল দিবেন।
নেপালের জন্য ভারতীয় ট্রানজিট পাওয়ার মূল শর্ত হচ্ছে আগে থেকে নেপালের ভিসা থাকতে হবে। এটা থাকলে আর কাগজপত্রে কোনো ভুল না থাকলে কোনো চিন্তা ছাড়াই পেয়ে যাবেন সড়কপথে ভারত হয়ে নেপাল যাওয়ার ট্রানজিট ভিসা। ভ্রমণ হোক সুন্দর আর আনন্দময়।
Collected.
https://bd24news.com