প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৭:০১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২৭, ২০২০, ১২:৪২ অপরাহ্ণ
ঈদে পুলিশের আত্মত্যাগ
মৌসুমী একটি ট্রাকে গাজীপুর থেকে লালমনিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে পথে তার মৃত্যু হলে ট্রাকচালক মরদেহটি রংপুরের তাজহাট এলাকায় রাস্তার উপর ফেলে দেন। পরদিন শুক্রবার ২২ মে সকালে রংপুর জেলার তাজহাট থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠান। পুলিশ ঠিকানা জানতে পেরে পরিবারকে খবর দেয়।
স্বামীর নিগৃহের শিকার মৌসুমী গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া মৌসুমীর মরদেহ গ্রামে দাফন করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রতিবেশীদের জানালে তারাও এর অনুমতি দেয়নি।মেয়েটির বাবা গোলাম মোস্তফা রংপুর মেডিকেল থেকে লাস তাই বাড়িতে না নিয়ে লাশবাহী গাড়ি চালককে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আঞ্জুমান মফিদুলে মরদেহটি দাফনের ব্যবস্থা করতে রাজী করান। কিন্তু গাড়িচালক আঞ্জুমানে না দিয়ে ঐদিন রাতের আঁধারে মরদেহ ফেলে দেয় তিস্তা নদীতে। ২৪ মে রোববার রাতে মরদেহটি ভাসতে ভাসতে তিস্তা নদীর ভাটিতে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানা এলাকায় নদী তীরে আটকে পরে।
ঈদের আগের দিন রোববার রাতে আদিতমারী থানা পুলিশ স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে তিস্তা নদী থেকে পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তারের মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করে। পরে তার পরিচয় খুঁজে বের করা হয়। আদিতমারী থানা এবং মৌসুমীর পাটগ্রাম থানা পুলিশ মেয়ের বাবা ও পরিবারের সদস্যদের মরদেহ নিয়ে যেতে বলে। কিন্তু মেয়েটির বাবা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আত্মীয়স্বজন তাদের অনাগ্রহ প্রকাশ করে। থানা চত্বরে জানাজা সম্পন্ন করা হয় । জানাজা শেষে মেয়ের বাবাকে ডেকে আনা হয়। তার কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দিয়ে আদিতমারী ও পাটগ্রাম থানা পুলিশ যৌথভাবে দাফন কাজ সম্পন্ন করে। ঈদের সময়টুকুও মৌসুমীর লাস নিয়ে দুই জেলার তিন থানা পুলিশকেই শুধু ব্যতিব্যস্ত থাকতে হয়েছে, আসেনি স্থানীয় প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ বা জনপ্রতিনিধির কেউ। বৃষ্টিতে ভিজে মরদেহটি উদ্ধার, পরিবারকে নিয়ে আসা জানাজা ও দাফন সবকিছুই পুলিশকে করতে হয়েছে।
পুলিশের এমন আত্মত্যাগ ভুলোমনা আমরা কতদিন মনে রাখতে পারবো !!
https://bd24news.com