মোঃ রায়হান আলী (ব্যুরো প্রধান)খুলনাঃ
সারা দেশের মত খুলনায়ও নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি মানার শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে দোকান ও শপিং মল খোলা হয়েছে। গত ৩১মে থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাটগুলো খুললেও ক্রেতা-বিক্রেতারা নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারছেন না। বিপনীবিতান গুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়।
সামাজিক দুরত্ব অমান্য করে চলছে গণপরিবহনও। বাজারে সাধারণ মানুষকে যাতায়াত ও কর্মকান্ড পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্তু নগরীর রাস্তায় ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রায় চলাচলরত যাত্রীদের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব মোটেও মানা হচ্ছে না। একটি ইজিবাইকে চালকসহ ৬ জন, মাহিন্দ্রায় চালকসহ ৫-৬ জন পর্যন্ত চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
অপরদিকে গত সোমবার থেকে সারাদেশের ন্যায় খুলনায় বাস চলাচল শুরু হয়েছে। পূর্বের ভাড়ার সাথে সরকার ঘোষিত ৬০ ভাগ বৃদ্ধি করে প্রতিটি রুটে বাস ভাড়া বেশি নেয়া হচ্ছে। সেখানে বাস কর্তৃপক্ষ আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিচ্ছেন এমন চিত্র দেখা গেছে।
তবে বাসের ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে।সরেজমিন মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা গেছে,সামাজিক দূরত্ব বজায় না রেখেই ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রায় যাত্রীরা চলাচল করছেন।
এক্ষেত্রে যাত্রী বা চালক কারও কোন প্রকার বাধা নেই। তাছাড়া সামাজিক দূরত্ব না রেখে সংক্রামন রোধে সরকারের নির্দেশনা না মানার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনেরও কোন প্রকার পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে ইজিবাইক-মাহিন্দা চালক ও যাত্রীদের কাছে জানতে চাইলে চালকরা বলেন, ২/৩ জন যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছালে সারাদিন যে টাকা আয় হবে, তা গাড়ীর মালিকদের দিতে গেলেও কম হবে।
তাহলে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খাব কি?এ বিষয়ে যাত্রীরা বলেন, ২/৩ জন যেতে হলে দিগুণ ভাড়া গুণতে হবে, তাই বিপদ জেনেও এভাবে চলাচল করছেন তারা।অপরদিকে সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, সেখান থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাওয়া বাসে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিচ্ছেন।
সরকার ঘোষিত ৬০ ভাগ ভাড়া নেয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছ থেকে।এ বিষয়ে যাত্রীদের সাথে কথা বললে অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় তারা বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, সরকার যে টাকা নির্ধারণ করেছেন, আমরা সে মোতাবেক যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি। তাছাড়া আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়েই বাস ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
সরকার নির্দেশিত সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই সব কিছু করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু বলেন, ইজিবাইক ও মাহিন্দ্রায় দু’জনের বেশি যাত্রী নেয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
রাস্তায় এ বিষয় মনিটরিংয়ের জন্য মহানগর পুলিশের বেশ কিছু সদস্য কাজও করছে। এ অভিযোগের বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে জানান তিনি।খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গণপরিবহনে চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে মাঠে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ কাজ করছেন।