আবু হানিফ, বাগেরহাট অফিসঃ
মৎস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত সুন্দরবনে সবধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছের নিরাপদ প্রজনন ও সংরক্ষনের লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বন বিভাগ।
করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেরা নিরাপদে সুন্দরবনে মাছ ধরতে পারলেও সেটি বন্ধ থাকায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। অবিলম্বে মৎস্য আহরনের পাশ-পারমিট চালু করার দাবি জানিয়েছেন সুন্দরবনের অভ্যন্তরে মৎস্য শিকারী জেলেরা।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চারটি রেঞ্জ শরণখোলা, চাঁদপাই, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকার ২৫ ফুটের কম প্রস্থের প্রায় চার শতাধিক খালকে মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধের তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেছে। তবে ২৫ ফুটের অধিক প্রস্থের খাল ও বনের নদী এলাকা এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, বনের মধ্যে দিয়ে ভোলা, বলেশ্বর, শ্যালা, পশুর নদী সহ ১৩টি নদ-নদী ও ৪৫০টি ছোট-বড় খাল প্রবাহিত হয়েছে। এ সব নদী ও খালে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ী, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও বিলুপ্ত প্রজাতির ইরাবতীসহ ছয় প্রজাতির ডলফিন পাওয়া যায়। জুলাই ও আগস্ট দুই মাস সুন্দরবনে মাছের প্রজনন মৌসুম। এ প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের ছোট খালগুলোতে মাছের আধিক্য বেশি থাকায় এক শ্রেণির অসাধু জেলে গোপনে ছোট খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে থাকে।
এ কারণে বনের মৎস্য ও অন্য জলজ প্রাণীর নিরাপদ প্রজনন ও সংরক্ষণসহ ও বিষ প্রয়োগ বন্ধে এ দু’মাস সুন্দরবনের অধিকাংশ খালে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পূর্ব-সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মোঃ জয়নাল আবেদীন ও চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মোঃ এনামুল হক বলেন, পাস-পারমিট নিতে আসা জেলেদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণে করোনার পর মাছ আহরণের জন্য জেলেদের সীমিত আকারে পাশ-পারমিট দেওয়া হবে। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে বনবিভাগের পাশাপাশি সুন্দরবন সহ ব্যবস্থাপনা কমিটি, সিপিজি, ভিটিআরটি ও ওয়াইল্ড টিমের সদস্য নিয়োজিত থাকবে।