ফজলুল করিম ফারাজী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানিতে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেতু পয়েন্টে ধরলা পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩১ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ অবস্থায় নদ-নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ইতোমধ্যেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, শাক সবজিসহ আমন ধানের বীজতলা। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা আতংকে দিন কাটাচ্ছে কুড়িগ্রামের বানভাসি মানুষজন।
কুড়িগ্রাম সদর ঘোগাদহ ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নে তিন-সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়েছে। কুড়িগ্রাম সদর ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কাইম বড়াই বাড়ী গ্রামের কাদের মিয়া জানান, এক দিকে করোনার কারণে কাজ কর্ম বন্ধ, অন্য দিকে বন্যার পানিতে আমার বাড়ি ডুবে গেছে এখন কোথায় থাকবো কি খাবো আপনাদের কে বলার মতো কোন ভাষা নাই ভাই।
কুড়িগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলমান বন্যায় কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় পাট ৭০ হেক্টর, সবজি ক্ষেত ৫০ হেক্টর, বীজতলা ২৫ হেক্টর ও আউস ধান ২০ হেক্টরসহ সব ধরনের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন।
কুড়িগ্রাম সদর পাঁচগাছী ইউনিয়নের কদম তোলা গ্রামের সবজি চাষী মোঃ আব্দুল মজিদ বলেন, আমার বিভিন্ন প্রকার সবজির ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। আজ অনেক কষ্ট করে পানিতে ভিজে কিছু পটল, বেগুন তুলে বাজারে বিক্রি করলাম দাম খুব কম।
তাছাড়াও দুই একদিনের মধ্যে জমি থেকে যদি পানি নেমেও যায় তাও সব সবজি নষ্ট হয়ে যাবে। আমাদের যে কি হবে তা একমাত্র আল্লাহ পাক জানেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২০ সেন্টিমিটার।
ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্ট ৩১ সেন্টিমিটার বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।