কোরবানির ঈদে ভারতীয় গরু আসবে না। সরকারের এমন ঘোষণায় করোনাকালেও দেশীয় খামারিরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু চোরাই পথে বাংলাদেশে গরু ঢুকে পড়ায় লোকসানের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।
খামারিরা জানান, করোনাকালে এমনিতে তাদের ঘরে ভাতের টান পড়েছে। কোরবানির ঈদকে ঘিরে স্বল্পসংখ্যক গরুকে মোটাতাজা করে কিছু লাভের আশা করছেন তারা।
অবৈধ পথে হলেও সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে উল্লেখ করে কয়েকজন খামারি বলেন, গবাদিপশুর রোগবালাইসহ পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে এমনিতে এখন গরুতে লাভ থাকছে না। তার ওপর ঈদের আগে ভারতীয় গরু প্রবেশ করলে গবাদিপশু পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে দেশীয় খামারিরা।
পাচার হয়ে আসা ছোট গরুগুলোকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেম্বার এর সাটিফিকেট দিয়ে বৈধ করে বাজারে বিক্রি করাছে,আর যেসব বড় গরু নৌপথে যাচ্ছে,তাদের কোন কাগজ পত্র কিছু নেই,যে গরু গুলো,স্হালপথে যাচ্ছে সে গুলোর শুধু কাগজ হচ্ছে।
যদিও পুলিশ প্রশাসন বলছে যে কোনো মূল্যে ভারতীয় গরুর প্রবেশ ঠেকাতে হবে। অন্যদিকে পরীক্ষা ছাড়াই ভারতীয় গরু অবাধে দেশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করলে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা দিতে পারে বলে আশংকা করছেন স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কোরবানির ঈদকে ঘিরে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে উত্তরের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ব্যবসায়ীরা ভারতীয় গরু বাংলাদেশে আনা শুরু করেছে। ভারত সরকার কর্তৃক বাংলদেশে গরু রপ্তানি নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে। দুই পারের ব্যবসায়ীরা অবৈধ পথে এসব গরু কেনা বেচা করছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরের সীমান্ত এলাকা কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার গোরকমন্ডপ, ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরীর,নারায়ণপুর,কুড়িগ্রাম সদরের, যাত্রাপুর,যাত্রাপুর চড় রলাকাটা,উলিপুরের সাহেবের আলগা, বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে কোরবানির ঈদকে ঘিরে গরু এনে জড়ো করা হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় দুই হাজারের(২০০০) মত।
কয়েকদিনের মধ্যেই আমদানির সংখ্যা ৪ গুন বাড়বে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা। একজন গরু ব্যবসায়ী জানান, প্রতি হাটে পুলিশ, বিজিবির কথা বলে,(লাইন ম্যান) তথা পাচার কৃত মালামালের টাকা, গরু প্রতি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দিতে হয়। গত এক সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কুড়িগ্রামের পরিচালক লে. কর্নেল মো. জামাল হেসেন জানান, ঈদ সামনে রেখে গরু চোরাচালান যাতে না বাড়ে এ জন্য সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বিজিবি। পাচার রোধে সিজারলিস্ট তৈরি করা হচ্ছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই ধরনের কথা জানান, বিজিবি ।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টচার্য জানান। এবারের ঈদকে ঘিরে ভারতীয় গরু যাতে দেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য সীমান্ত এলাকায় বিজিবিকে সতর্ক করা হয়েছে।