নীলফামারীতে বন্ধুর ছুরিকাঘাতে খুনের শিকার হয়েছে শামীম ইসলাম (১৮) নামের এক শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার(৩ জুলাই/২০২০) রাত ১০টার দিকে জেলা সদরের পলাশবাড়ি ইউনিয়নে তরণীবাড়ি রেল স্টেশনে ওই খুনের ঘটনা ঘটে।
এক প্রেমিকাকে নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে দ্বন্দের জেরে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে এলাকাবাসী ও শামীমের পরিবারের দাবি। খুনের শিকার শামীম নীলফামারী সদর উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়নের তরণীবাড়ি মাদ্রাসা পাড়া গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে।
পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে আজ শনিবার(৪ জুলাই/২০২০) বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। এঘটনায় শামীমের বন্ধু রবিউল ইসলাম বাবুকে (১৮) আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে পরিবারের পক্ষে। রবিউল ইসলাম বাবু একই গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। সে অষ্টম শ্রেণীতে পড়া শেষে তরণীবাড়ি বাজারে তার বাবার সঙ্গে হোটেল ব্যবসায় জড়িত।
শামীমের অপর বন্ধু একই ইউনিয়নের তরণীবাড়ি বাবুপাড়া গ্রামের সানাউল হোসাইন (১৮) বলেন, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তরণীবাড়ি বাজারে বসে শামীমসহ কথা বলছিলাম। এসময় রবিউল ইসলাম বাবু সেখানে এসে শামীমকে রেল স্টেশনের দিকে ডেকে নেয়। আমি তাদের পিছু নিয়ে সেখানে পৌঁছতেই বাবু চলে যায়।
এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই ‘বাবু আমাকে খুন করলো’ বলেই শামীম স্টেশনের প্লাটফরমে পড়ে যায়। তার বুকের নীচ থেকে রক্ত ঝড়তে দেখে চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন। সানাউল জানায়, শামীমের প্রেমিকাকে নিয়ে বাবুর সঙ্গে দ্বন্দ ছিল। তার (শামীমের) প্রেমিকার সঙ্গে দুই বছর আগে প্রেম থাকার দাবি করে আসছিল বাবু।
ওই দ্বন্দের জেরে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। বাজারে কথা বলার সময়ও শামীম ওই দ্বন্দের কথা উল্লেখ করেছিল। শামীমের বড়ভাই নূর আমীন (২৫) বলেন, আমার ভাইকে খুনের পর বাবু আমাকে ফোনে বলে ‘তোর ভাইয়ের লাশ প্লাটফরমে পড়ে আছে এসে নিয়ে যা’। আমি দ্রুত স্টেশন ঘরের সামনে গিয়ে প্লাটফরমে আমার ভাইকে রক্তাত্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি।
সেখানে উপস্থিত এলাকাবাসীর সহযোগিতায় হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবুকে আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এলাকাবাসী জানায়, সানাউলের চিৎকারে এগিয়ে এসে ওই খুনের ঘটনা দেখতে পাওয়া যায়। অচেতন অবস্থায় তাকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে রাতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে আজ শনিবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রেল স্টেশন এলাকায় ঘটনাটি ঘটায় আমরা সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশকে খবর দিয়েছি। সেখানে মামলা দায়ের হবে।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শামীমের বন্ধু সানাউল হোসাইনকে থানায় আনা হয়েছে। আজ শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে সৈয়দপুর জিআরপি থানার উপ-পরিদর্শক শাহজাহান আলী মন্ডল বলেন, এঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।