ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ৩ বছরের শিকলবন্দি বন্দি জীবন থেকে মুক্ত হলেন বৃদ্ধ ফুল মিয়া।শনিবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম,স্থানীয়দের সহায়তায় শিকলবন্দি অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বৃদ্ধকে মুক্ত করেন।
অনলাইন সামাজিক মাধ্যমে নেত্রকোনায় নিজ গৃহে ৩ বছর ধরে শিকলে বাঁধা ফুল মিয়া' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের বিষয়টিতে উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের নজরে পড়ে।
এ নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পান তারা। এরপরই বৃদ্ধকে অবমুক্ত করেন ইউএনও ফারজানা খান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম বলেন, ওই বৃদ্ধকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে জেনে আমি নিজে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে উদ্ধার করি।
যারা এটি ঘটিয়েছে নিঃসন্দেহে অমানবিক কাজ করেছে। আমি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই,এরকম একটি অনুসন্ধানমূলক সংবাদ প্রকাশ করার জন্য।
জানা গেছে, ২০০৩ সালে মাটির নিচ থেকে (ধাতব জাতীয়) মূল্যবান একটি পাথর খুঁজে পান। পাথরটি তাঁর স্ত্রীর কাছে লুকিয়ে রাখতে দেন। পরে স্ত্রীর কাছে চাইলে তিনি বলেন, পাথরটি সুরুজ মিয়া ও মাওলানা রফিকুল ভাইয়ের কাছে ৮০হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।
এ কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা বটি দা দিয়ে স্ত্রী ফাতেমা খাতুনের গলায় কোপ দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
২০০৩ সালের বৈশাখ মাসের ৬ তারিখ এ হত্যার ঘটনা ঘটে বলে জানান বৃদ্ধের ছেলে আবু হানিফা। এ হত্যার ঘটনায় ১২ বছর ৫ মাস ১৭ দিন জেল খাটে ফুল মিয়া।
পরে পাথর বিক্রির বিষয়টি নিয়ে অনেকের সঙ্গে বলাবলি করলে ক্ষেপে যান সুরুজ মিয়া ও রফিকুল ইসলাম। এরই জেরে ফুল মিয়ার ছেলেদের অসহায়ত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ফুল মিয়াকে শিকলবন্দি করে রাখার নির্দেশ দেন সুরুজ আলী ও রফিকুল ইসলাম।
এভাবেই ঘরে বন্দি অবস্থায় ৩ বছরেও আলোর মুখ দেখেননি এই বৃদ্ধ। অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিকল মুক্ত হলো ফুল মিয়া।