প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২২, ২০২৪, ১০:২৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ২০, ২০২০, ১১:২৭ অপরাহ্ণ
ইউএনও পরিচয়ে প্রতারণার চেষ্টা, পুলিশের হস্ত’ক্ষেপে প্রতারক শনাক্ত,
ঠাকুরগাঁওয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পরিচয়ে এক প্রতারক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ওই প্রতারককে শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন।
পুলিশ ও ব্যবাসয়ীরা জানান, গত শনিবার দুপুরে দেবীপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সইমুদ্দিনের মুঠোফোনে একটি অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে কল আসে। কলটি রিসিভ করা মাত্রই অপর প্রান্ত থেকে একজন ব্যক্তি নিজেকে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিচয়ে কথা শুরু করে।
কতিথ ইউএনও মুঠোফোনে ইউপি সদস্য সইমুদ্দিনকে বলেন তিনি মুন্সিহাট বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলবেন। ইউপি সদস্য কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তারাহুরো করেই মুন্সিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম নুজু, সবুজ ইসলাম, অনন্ত সরকার ও মেজবুল ইসলামের সঙ্গে কতিথ ইউএনওকে কথা বলিয়ে দেন। এরপর সেই কতিথ ইউএনও ওই ৪ জনকে ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর নেন। পরে ইউপি সদস্য সইমুদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে ইউনিয়ন পরিষদে চলে আসেন।
কিছুক্ষণ পর কতিথ ইউএনও মুঠোফোনের মাধ্যমে ওই ৪ ব্যবসায়ীর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে বলেন মুন্সিহাট বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা হবে। ভ্রাম্যমান আদালত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাইলে ওই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন কতিথ ইউএনও।
ইউএনও'র ভয়ে ওই ৪ ব্যবসায়ী টাকার সন্ধানে এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে স্থানীয়দের সাথে কতিথ ইউএনও'র চাঁদা দাবির বিষয়টি শেয়ার করলে স্থানীয়রা টাকা না দিতে পরামর্শ দেন।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইউএনও পরিচয়ে টাকা দাবির ঘটনা শুনেই তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউপি সদস্য সইমুদ্দিন। এসময় ব্যবসায়ীরা ওই ইউপি সদস্যের উপর চড়াও হন। পরে স্থানীয় অন্য ইউপি সদস্য ও গন্যমান্য ব্যক্তিরা ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশের স্মরনাপন্ন হন। পরে থানা পুলিশ কতিথ ইউএনও'র মুঠোফোন ট্যাকিং করে জানতে পারেন তার বাড়ি খুলনা এলাকায়। সেখান থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছে ইউএনও পরিচয়ে প্রতারণা করার চেষ্টা করছিল।
এদিকে রোববার বিকেলে মুন্সিরহাট বাজারে ব্যবসায়ীদের সাথে পথসভা করে ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ। সেখানে ব্যবাসয়ীদেরকে আরও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
এসময় সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মর্তুজা, পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশণ) নাজমুল হক সহ সদর থানা পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউপি সদস্য সইমুদ্দিন বলেন, ইউএনও ফোন পেয়ে কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। বিশ্বাস করে নিয়েছিলাম তিনি হয়তো ইউএনও। পরে যখন শুনতে পারি মুঠোফোনের ব্যক্তিটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করেছে, তাৎক্ষণিক ব্যবসায়ীদেরকে টাকা দিতে মানা করি ও তাদের নিয়ে থানা পুলিশের স্মরনাপন্ন হই।
দেবীপুরের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ইউপি সদস্য বুঝতে পারেনি তার সাথে মুঠোফোনে ইউএনও পরিচয়ে একজন প্রতারণা করছে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মর্তুজা বলেন, করোনাকে পুজি করে অনেকেই এভাবে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ মানুষের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। এবিষয়ে সকলকে সর্তক থাকতে হবে। কতিথ ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
https://bd24news.com