গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবন থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক ( ৪৯ টি) কম্পিউটার চুরির ঘটনার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত সাত আসামী আদালতে চুরির দায় স্বীকার করে তাদের জবানবন্দি দিয়েছে।
আজ রবিবার ১৬ আগস্ট গোপালগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার তথ্যটি তুলে ধরেন পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান।ঘটনার বুলেট পয়েন্ট চিহ্নিত করে পুলিশ সুপার বলেন,”গত ২৬ জুলাই মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পিছনের দিকের জানালা ভেঙে ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি করে চক্রটি।
সেগুলো বশেমুরবিপ্রবি’র কেন্দ্রীয় মন্দিরের কাছে রেখে পরবর্তীতে কৌশলে একটি ট্রাকে করে ঢাকায় পাচার করে।কম্পিউটারগুলো ঢাকা নিয়ে যুবলীগ নেতা পলাশ শরীফের মালিকানাধীন হোটেল ক্রিস্টাল ইনে রাখা হয়।খবর পেয়ে ১৩ আগস্ট রাতে গোপালগঞ্জ ও ঢাকা বনানী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই আসামি গ্রেফতারসহ ৩৪ টি কম্পিউটার উদ্ধার করে।
এ চুরিতে জড়িত সাত সদস্যে এখন পর্যন্ত ধরতে পেরেছে পুলিশ।গ্রেফতারকৃত সাতজন গত ১৫ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অমিত কুমার বিশ্বাসের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং চুরির সকল গোপন রহস্যের বর্ননা দেন।
এছাড়া জবানবন্দিতে যুবলীগ নেতা পলাশ শরীফ সহ অনেক রাঘব বোয়ালের নামও বেড়িয়ে এসেছে।তবে সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশ করেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গোপালগঞ্জ সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন,গ্রেফতারকৃত ৭ জনের মধ্যে কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার ইদ্রাকচর গ্রামের মৃত সেলিম মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া(৪৫) ও ময়মনসিংহ জেলার কোতায়ালী থানার চোরখাই গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে হুমায়ুন কবিরকে(২৪) ৩৪ টি চোরাই কম্পিউটারসহ ঢাকার ক্রিস্টাল ইন হোটেল থেকে গত ১৩ আগস্ট রাতে গ্রেফতার করা হয়।
প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃত অন্য ৫ জন হলেন স্বয়ং বশেমুরবিপ্রবি’র লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মেরী গোপীনাথপুর গ্রামের বিল্লাল শরীফের ছেলে মাসরুল ইসলাম পনি শরীফ(২৩),
একই উপজেলার বরফা শেখ পাড়ার আবুল হোসেনের ছেলে আঃ রহমান সৌরভ শেখ(১৯), বরফা মধ্যপাড়ার আইয়ুব শেখের ছেলে হাসিবুর রহমান শান্ত ওরফে কাকন(১৯),বরফার কামালপাশা মিনার ছেলে নাইম উদ্দিন(১৯)এবং মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার বিশমপুরদী এলাকার সালাম হালদারের ছেলে নাজমুল হাসান(১৯)। তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলেন,গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশের অভিযান তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।তাদের ধরতে পারলে ২০১৭,২০১৮ সালের শতাধিক কম্পিউটার চুরিসহ সকল চুরির ঘটনা উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কম্পিউটার চুরির ঘটনায় এই চক্রটি জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ জড়িত আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।