ঢাকা-১৮ আসনের উপ-নির্বাচনে নৌকার টিকিট পেতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বরিশালের তিন বারের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম মনি। ২১ আগস্ট দুপুরে তিনি ধানমন্ডি ৩'র আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলীয় এ মনোনয়ন ফরম জমা দেন।
এসময় স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা তার সঙ্গে ছিলেন। সাবেক স্বরাষ্ট্র,ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপির মৃত্যুতে এ আসনটি শুন্য হয়। প্রসঙ্গত মনিরুল ইসলাম মনি বরিশাল সংযুক্ত পিরোজপুর বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠি আসনে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে দু'বার জাতীয়পার্টির ও ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-২(বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের টিকিটে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
জাতীয়পার্টির শাসনামলে তিনি মিল্ক ভিটার চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৮-১৪ সালে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি কৃষি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। তিনি তিন বারের সংসদ সদস্য হিসেবে স্বরূপকাঠি,বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে এ তিন উপজেলাকে উন্নত,সমৃদ্ধ আধুনিক ও আলোকিত উপজেলায় রূপান্তর করেন। উন্নয়নের রূপকার হিসেবে তিনি এলাকার সর্বমহলে প্রশংসা ও সুনাম কুড়িয়েছেন।
তার পিতা ১৯৫২'র ভাষা,৫৪'র যুক্তফ্রন্ট,৬২ ও ৬৪'র গণ আন্দোলন এবং ৬৬'র ৬ দফা আন্দোলনের অগ্রভাবে থাকা স্বাধীনতা সংগ্রামী বাঙালী জাতীয়বাদের অন্যতম নেতা অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম অবিভক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর ছিলেন।
সর্বজন শ্রদ্ধেয় রফিকুল ইসলাম বরিশাল জেলা ন্যাপের সভাপতি ও বিএম কলেজের বাংলা ও দর্শণ বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। মনিরুল ইসলাম মনি ও তার ভাই জাহিদুল ইসলাম মাহমুদ জামি ও মইদুল ইসলাম চুনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সন্মূখযোদ্ধা হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ঢাকাকে শত্রুমুক্ত করতে তাদের তিন সহোদরের সাহসীপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এছাড়া ৯ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর আ. জলিলের ঘনিষ্ট সহযোদ্ধা হিসেবে বরিশাল অঞ্চলকে পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত করতে তাদের বিশেষ অবদান রয়েছে। তার মা মাহমুদা রফিক কবি,সাহিত্যিক ও প্রধান শিক্ষক এবং বোন নারগিস রফিকা রহমান পাকিস্তান আমলে ডাকসাইটের নারী সাংবাদিক ছিলেন,লিখতেন দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায়।
এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি জাতীয় রাজনীতিতেও পরিচিত মুখ। তিনি আওয়ামী লীগে যোগদানের পূর্বে জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহা সচিব ও জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ঢাকার শান্তি নগর ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনি উত্তরা ১০ নং সেক্টরে অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালণ করছেন।
দীর্ঘদিন উত্তরা কল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। বরিশালের বানারীপাড়ার চাখারে তার জন্ম হলেও উত্তরা তথা ঢাকা -১৮ নির্বাচনী আসনের মাটি -মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক সুনিবিড়। বর্তমানে সংসদ সদস্য না থাকলেও উত্তরা, দক্ষিণ খান খিলক্ষেত ,তুরাগ ,উত্তরখান থানাসহ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জনকল্যাণকর ও উন্নয়নমূলক কাজে সম্পৃক্ত রয়েছেন মনিরুল ইসলাম মনি।
সদ্য প্রয়াত অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের সঙ্গে ভাই-বোনের অপার সম্পর্ক ছিলো তার। ঢাকা-১৮ আসনের ব্যাপক উন্নয়নে অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুনের পাশে অকৃপনভাবে ছিলেন তিনি। ফলে ওই নির্বাচনী এলাকায় তারও ব্যাপক পরিচিতি ও সুনাম রয়েছে।৭১'র রণাঙ্গনের এ বীর সেনানীকে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী করা হলে সেখানকার অধিবাসীরা তাকে অকুন্ঠ সমর্থণ করে নৌকার বিজয় তরান্বিত করবে বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞমহলের অভিমত।
এছাড়া ওই এলাকায় বরিশালের বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে যার বাড়তি সুবিধা পাবেন মনিরুল ইসলাম মনি। তার সমর্থনে ইতোমধ্যে ওই নির্বাচনী এলাকায় তার সমর্থকরা ব্যাপক পোষ্টারিং,ফেষ্টুন ও ব্যানার সাঁটিয়েছে। বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট।
এ প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম মনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ ও লালন করে তার স্বপ্নের সোনারবাংলা বিনির্মাণ ও দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নে আপসহীন ও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করবেন সততা ও কর্তব্য নিষ্ঠার সঙ্গে সেই দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালণ করবো।