প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৪:৩৬ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৫, ২০২০, ৪:৫০ অপরাহ্ণ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ব্যক্তিমালিকানার জমির গাছ বিক্রি!
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সড়ক সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জমি অধিগ্রহণ না করেই বন বিভাগের মাধ্যমে গাছ বিক্রি করে দিয়েছে। সড়ক উন্নয়নের নামে গাছ কাটায় অনিয়মের বিষয়ে সওজ ও বন বিভাগ একে অপরকে দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।
উপজেলার ঈশ্বরগঞ্জ-আঠারবাড়ি ১৫ কিলোমিটার সড়কটি স্থানীয় এলজিইডি থেকে সম্প্রতি সওজের কাছে ন্যস্ত হয়। প্রায় ২৬ ফুট প্রস্থে ১১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পুনর্নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছে সওজ। সড়কের দুই পাশের গাছ বন বিভাগকে বিক্রির নির্দেশনা পাঠালে সওজের সঙ্গে সমন্বয় করে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
প্রায় সাড়ে ৩৭ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া সড়কের দুই হাজার ২৪৫টি গাছ ঠিকাদারের লোকজন কাটতে শুরু করলে বাধে বিপত্তি। অধিগ্রহণ না করইে ব্যক্তিমালিকানা জমির অনেক কাছ টেন্ডারের আওতায় নিয়ে কেটে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পৌর এলাকার ধামদী এলাকায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনিমা মজুমদারের বাসার ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাছ কেটে নিয়ে যায়। গাছটি কেটে ফেলায় গত ১৩ আগস্ট যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন তিনি।
একই এলাকার আনোয়ার হোসেন খান সোহেলের বাসার প্রাচীরের ভেতর থেকে বিনা নোটিশে ফলদগাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বন বিভাগ ও সওজের লোকজন তদন্তে গিয়ে শিক্ষক অনিমা মজুমদারের গাছটি ব্যক্তিমালিকানায় থাকার প্রমাণও পান।
ওই অবস্থায় বৃহস্পতিবার অভিযোগকারীর ভাই স্বপন মজুমদারকে সওজের স্থানীয় উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ডাকা হয়। স্বপন মজুমদার বলেন, তাদের গাছটি কেটে সামান্য একটু অংশ রেখে সবটুকু সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গাছ নিয়ে কোনো ঝামেলায় না যেতে বলছেন কর্মকর্তারা।
ঈশ্বরগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের চুক্তির ২৫ ভাগ রাজস্ব না দিয়েই গাছ কাটা শুরু করলে তারা নিষেধ করেন। তিনি তা না মানায় বুধবার গাছ কাটা বন্ধ করে দেন। উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. মাজহারুল হক বলেন, সওজের নির্দেশনা অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই গাছ বিক্রি করা হয়। এখানে তাদের দপ্তরের কোনো গাফিলতি নেই।
ব্যক্তির গাছটি উদ্ধার করে দেওয়া হবে। ইউনিয়ন পরিষদের দাবির বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী শেখ মোজাম্মেল হক বলেন, সড়কের দুই পাশেই অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বন বিভাগকে গাছ বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেখানে ব্যক্তিমালিকানার গাছ পড়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, অধিগ্রহণ কাজ শুরু না হলেও প্রস্তাবিত জায়গা থেকে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। পরে অধিগ্রহণ হলে ন্যায্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ। এ নিয়ে বহুবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আপত্তি থাকায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আগামী সোমবার সংশ্নিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসা হবে।
https://bd24news.com