প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ৫:১০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০, ৩:৪১ অপরাহ্ণ
গ্রামটির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রায় আট বছর আগে মাছ শিকারের জন্য খাল দুটিতে বাঁধ দেওয়া শুরু হয়। তখন থেকেই জলাবদ্ধতার শুরু। বৃষ্টি হলেই গ্রামের একটি অংশ থেকে পানি বের হতে পারে না। তখন এ অংশের লোকজন জলাবদ্ধতায় পড়ে।
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে আনোয়ার হোসেন।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চিরনখালী ও কাটাখালী খালের প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে অর্ধশতাধিক বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পানি নিষ্কাশন বাধা পাওয়ায় গ্রামটির শতাধিক পরিবার প্রতি বর্ষায় জলাবদ্ধতায় পড়েন।
গ্রামটির কয়েকজন বাসিন্দা জানান, প্রায় আট বছর আগে মাছ শিকারের জন্য খাল দুটিতে বাঁধ দেওয়া শুরু হয়। তখন থেকেই জলাবদ্ধতার শুরু। বৃষ্টি হলেই গ্রামের একটি অংশ থেকে পানি বের হতে পারে না। তখন এ অংশের লোকজন জলাবদ্ধতায় পড়ে। সর্বশেষ ১৭ দিন ধরে পানিবন্দী রয়েছে শতাধিক পরিবার।
সত্যের সন্ধানে আমরা প্রতিদিন
আবু তালেব নামের একজন বলেন, জলাবদ্ধতায় তাঁরা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাঁরা জমিতে ফসল করতে পারছেন না। পুকুরের মাছও ভেসে যাচ্ছে। এবার আমনের মৌসুম চলে যাচ্ছে। এখনো ধানের চারা লাগাতে পারেননি।
গ্রামের লোকজন জানান, খালে যাঁরা বাঁধ দিয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই এ এলাকায় বাস করেন না। তাঁদের বাড়ি ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা মহাসড়কের কাছাকাছি উঁচু এলাকায়। মাছ চাষ করার জন্য তাঁরা প্রথমে খালের পাশের জমিতে বাঁধ দেন। পরে খালেও বাঁধ দেওয়া শুরু করেন। এতে তৈরি হওয়া জলাবদ্ধতায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
আজ রবিবার গিয়ে দেখা যায়, অনেক পরিবারের আঙিনায় পানি, ঘরে পানি। পানি ভেঙে তাঁদের চলাচল করতে হচ্ছে। কেউ খাটের ওপর রান্না বসিয়েছেন।
কয়েকজন জানান, বেশির ভাগ পরিবার দিনের বেলায় গ্রামের উঁচু অংশের প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। গরু-ছাগলসহ গবাদিপশুও প্রতিবেশীদের বাড়িতে রাখতে হয়। পানি ভেঙে চলাচল করায় অনেকেই ঠান্ডাজনিত ও চর্মরোগে ভোগে। রাতে সাপের ভয়ে অস্থির থাকে।
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
হোসনে আরা নামের একজন বলেন, তাঁর আঙিনা ও ঘরে পানি উঠেছে। এ অবস্থায় বাড়িতে থাকা কঠিন। তিনি সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে যান। সারা দিন বিভিন্ন বাড়িতে ঘুরেফিরে সময় কাটান। রাতে বাড়ি ফেরেন। তখন খাটের ওপর চুলা পেতে কোনোরকমে রান্না করেন। এভাবে ১৭ দিন ধরে জীবনযাপন করছেন।
মো. জালাল উদ্দিন বলেন, জমে থাকা পানিতে পা দিলে খুব চুলকায়। পায়ের আঙুলে ক্ষত হয়।গ্রামের কয়েকজন জানান, প্রায় আট বছর ধরে বর্ষাকালে এমন দুর্ভোগের মধ্যে থাকলেও কেউ এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেননি। যাঁরা খালে বাঁধ দেন, তাঁদের বেশির ভাগই প্রভাবশালী। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পান না। এমনকি তাঁদের নামও বলতে চান না কেউ।
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
খালে বাঁধ দেওয়ায় ময়মনসিংহ সদর উপজেলার রশিদপুর গ্রাম জলাবদ্ধ হয়ে আছে এব্যাপারে
জানতে চাইলে চরনীলক্ষীয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফারুকুল ইসলাম বলেন, ‘রশিদপুর গ্রামের জলাবদ্ধতার সমস্যাটি আমি সম্প্রতি জেনেছি। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।