বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণ, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সাবেক সহকারী কমিশনার নাদির হোসেন শামীমের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ কয়েকজন নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে তলব করা হয় নাদির হোসেন শামীমকে।
এদিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব উপ সচিব মো. জাহাঙ্গির হোসেনের অফিস কক্ষে দিনভর অভিযুক্ত এবং ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়।
শামীম বর্তমানে যশোর জেলা প্রশাসনে সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পশ্চিম শালীহর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনা দুই নারীরই বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। তাদের মধ্যে একজন বর্তমানে পেশায় শিক্ষিকা এবং আরেকজন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্রী।
শামীমের প্রতারণার শিকার শিক্ষিকা জানান, এদিন সকাল ১১ টায় উপসচিব মো. জাহাঙ্গির হোসেন তার কাছ থেকে শামীমের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মৌখিকভাবে শোনার পর তা লিখিত আকারে গ্রহণ করেন।
তিনি অভিযোগের সাথে শামীমের সাথে অন্তরঙ্গ ছবি, মেসেঞ্জারে উভয়ের গোপন বার্তা আদান প্রদানের প্রিন্ট কপিসহ বিভিন্ন আলামত সংযুক্ত করে দেন। শামীম অভিযোগকারী শিক্ষিকার সঙ্গে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। বিয়ে না করার সম্পর্কে শামীম বলেন, কলেজে পড়াশোনার সময় ওই নারী রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন, একাধিক ছেলেদের সাথে প্রেম ছিল উপ সচিব শামীমের কাছে জানতে চান তার এসব কর্মকা-সরকারি চাকরির।
নীতিমালা ভঙ্গ হয়েছে কি না উত্তরে শামীম তার দোষ স্বীকার করেন।
অপর অভিযোগকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর নিকট থেকেও মৌখিক এবং লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেছেন উপ সচিব জাহাঙ্গির হোসেন। ওই ছাত্রী জানান, তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে শামীম বলেছেন, আমি নাকি তাকে একতরফা ভালোবেসেছিলাম। শামীম বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার সঙ্গে যে বহুবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে কথা অবলীলায় অস্বীকার করেছেন।
উপ সচিবের কাছে তাদের প্রেম সংক্রান্ত কিছু আলামত দিয়েছেন জানান ওই ছাত্রী। এদিকে শিক্ষিকার সাথে যাওয়া অপর এক ছাত্রী জানান, শামীম তার সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে একপর্যায়ে তাকে বিয়ে করেছে জানানোর জন্য ওই শিক্ষিকার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। যাতে ওই শিক্ষিকা শামীমের সাথে সম্পর্ক ছেড়ে দেয়। কিন্তু শামীম পরবর্তীতে তাকে (ছাত্রী) বিয়ে না করে প্রতারণা করেছেন। তিনি শামীমের প্রতারণা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারীরা বলেন শামীম সচিবালয়ে তার নব বিবাহিত স্ত্রীকে (সহকারী জজ) সঙ্গে নিয়ে যান সহকারী জজ সচিবালয়ের বিভিন্ন কক্ষে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখেছেন তারা।
উপসচিব সচিব ওই তিন নারীকে জানিয়েছেন তিনি অভিযোগ শুনেছেন এসব অভিযোগ আরও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।