ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মে মাসের ৫ তারিখ
থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে ৪ হাজার ৫৬০ দশমিক ৬৯০ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং ৩৫ টাকা
কেজি দরে ৬৫৪ মেট্রিক টন আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ফুলবাড়ীতে চাল
সরবরাহের জন্য ১৪১ জন মিলারের সঙ্গে চুক্তি করে খাদ্য বিভাগ।
চলতি মৌসুমে খাদ্য বিভাগের ধান-চাল সংগ্রহের শেষ দিন গত ৩১ আগস্ট সোমবার থাকলেও খাদ্য বিভাগ এটিকে
বর্ধিত করে শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করে গত মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত। বর্ধিত
সময়ের শেষদিন পর্যন্ত সিদ্ধ চাল সংগ্রহ হয়েছে ৪ হাজার ৪৭ দশমিক ৮১০ মেট্রিক টন, যার
লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৫৬০ দশমিক ৬৯০ মেট্রিক টন।
একইভাবে ৬৫৪ মেট্রিক টন আতপ চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষদিন পর্যন্ত এক ছটাক চালও সংগ্রহ করা যায়নি। চুক্তিবদ্ধ ১৪১ জন মিলারের মধ্যে ১০৮ জন মিলার চুক্তির সব চালই সরবরাহ করেছেন। আবার ৯ জন মিলার চুক্তির
আংশিক চাল সরবরাহ করলেও ২৪ জন মিলার এক ছটাক চালও সরবরাহ করেননি। এ কারণে লক্ষ্যমাত্রা
অর্জন করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফুলবাড়ী পৌর এলাকার চাল বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল
বিক্রি হয়েছে ৪১-৪২ টাকায়। মিলাররা বলছেন, ধানের দাম বেশি। মোটা জাতের ধান কিনে
প্রতি কেজি চাল উৎপাদনে ৪০ টাকার ওপরে খরচ হচ্ছে। সেখানে সরকার সরবরাহ দর দিয়েছেন
প্রতি কেজি ৩৬ টাকা। এ অবস্থায় খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করলে প্রতি কেজিতে ৫-৬ টাকা
লোকসান গুণতে হবে।
ফুলবাড়ী চাউল কল মালিক সমিতির আহবায়ক মো. মঞ্জিল মোরশেদ বলেন, ‘বোরো
মৌসুমের শুরু থেকেই ধানের বাজার উর্ধ্বগতি হওয়ায় আশানুরূপ ধান কিনতে পারেননি
মিলাররা। করোনা আতঙ্কে দেশে খাদ্যঘাটতির আশঙ্কায় অনেক কৃষক ধান বিক্রি করেননি।
ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম মওলা বলেন, সরবরাহের সময়সীমা বাড়ানোর পরও
চুক্তিবদ্ধ ২৪ জন মিলার চাল সরবরাহ না করায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্তসহ লাইসেন্স বাতিল করা
হবে।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আশ্রাফুজ্জামান বলেন, সময়সীমার মধ্যে চাল
সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ মিলারদের কাছে চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এরপরও যারা
সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেননি, তাদের বিরুদ্ধে আগামীতে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়া হবে।