ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে আমন ধান ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমন দেখা দিয়েছে। কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহন করেও ফল পাচ্ছেন না অনেক কৃষক। আর উপজেলা কৃষি অফিস বলছে ইঁদুর মারা ছাড়া কোন উপায় নেই। ফলে চলতি আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন কমে যাবার আশঙ্কা করছেন ভুক্তভুগি কৃষকরা।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় দেশি, উফশী ও হাই ব্রীড জাতের ধান আবাদ হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার ২’শ ৭৫ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমি আবাদ হয়েছে। শ্রাবণ মাসে শেষে এবং ভাদ্র মাসে শুরুতে জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করার কথা থাকলেও বন্যার পানির কারণে কিছুটা দেরিতে ধানের চারা রোপন করেছে কৃষক। কোন প্রাকৃতি দুর্যোগ দেখা না দিলে অগ্রহায়ণ মাসে এই ধান কাটা শুরু হবে।
উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জমিতে পানি থাকা সত্বেও ইঁদুর কাঁচা ধান গাছ কেটে জমিতেই ফেলে রেখেছে। কোন কোন জমিতে ধান গাছ কাটার কারণে জমির অনেক জায়গা খালি হয়ে গেছে। কৃষকরা ইঁদুর তাড়াবার চেষ্টায় জমিতে কলা গাছ বা বাঁশের কঞ্জি পুঁতে রেখেছে। কিন্তু তাতে কোন সুফল মিলছে না।
ঘোষপাল গ্রামের কৃষক শামস ই তাবরীজ রায়হান জানান, ইঁদুরের আক্রমন থেকে বাচঁতে জমিতে বিষটোপ সহ একাধিক পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন। তাতে কোন কাজ হয়নি। বেশ কয়েক জন কৃষক জানান, পরামর্শ নেবার জন্য এলাকায় কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের দেখাও পাচ্ছেন না তাঁরা। খামারগাঁও গ্রামের কৃষক আঃ আলী বলেন, তাঁর জমির ধান ইঁদুর কেটে সাফ করে দিচ্ছে। চেষ্টা করেও ইঁদুর সরাতে পারছেন না।
কৃষক সিরাজ মিয়া বলেন, সাধারণত আমরা দেখেছি পাকা ধানে ইঁদুর আক্রমন করে। কিন্তু এবার ঘটলো এর ব্যতিক্রম। ধানের কচি চারা কেটে সাবার করছে। বনগ্রাম গ্রামের কৃষক সুজাক মিয়া বলেন, ইঁদুরের কারণে এ বছর ধান ঘরে তুলতে পারবো কি না সে চিন্তুা করছি।
এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন-অর রশীদ বলেন, ইঁদুর থেকে বাচঁতে একমাত্র পথ হলো সকলে মিলে ইঁদুর মেরে ফেলা। কৃষকরা মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পায় না এমন প্রশ্নের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, কিছু কিছু মাঠেকর্মী এলকায় যায়না ঠিক। তবে এর সংখ্যা কম। যদি ইউনিয়ন পর্যায়ে তাদের বসার ব্যবস্থা করা যেত তাহলে কৃষকরা সহজেই পরামর্শ পেত।