প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১:১৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০, ৬:৩৩ অপরাহ্ণ
ধর্ষণচেষ্টার মামলা করলেন শাশুড়ি জামাই বললেন বিবাহিত স্ত্রী।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন স্বামী। বিয়ের প্রায় দুই বছর পর এ ধরনের অভিযোগ এনে মেয়ের স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন শাশুড়ি। এ ধরনের মামলা হয়েছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানায়। মামলাটি তদন্ত করছেন ওসি (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান।
আজ বুধবার তিনি বলেন, তারা দুইজনই বৈধ স্বামী-স্ত্রী। প্রাথমিক তদন্তে তার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে আগামি এক সপ্তাহের মধ্যেই স্পষ্ট হবে আসল রহস্য। এর মধ্যে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্বামী ১০০ ধারায় ময়মনসিংহের একটি আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, অভিযুক্ত স্বামী হচ্ছেন ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের ঝাউগড়া গ্রামের আবেদ আলী মুন্সির ছেলে মো. সাইদুর রহমান। তিনি কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন গত ১৭ বছর ধরে। গত প্রায় এক বছর ধরে তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জানা যায়, ইসলামী শরিয়তমতে গত ১৭ এপ্রিল ২০১৮ সালে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার দেনমোহর ধার্য্য করে তিনি নান্দাইল উপজেলার সুন্দাইল গ্রামের দোয়াদ মিয়ার মেয়ে শারমিন আক্তারকে বিয়ে করেন। এর মধ্যে স্ত্রী সন্তানসম্ভাবা হলেও গর্ভপাত হয়ে যায়। পরে তিনি গত বছরের ১৫ নভেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগে ভর্তি করান। সেখানে চারদিন চিকিৎসা চলে।
চিকিৎসার পর স্ত্রী শারমিন সুস্থ হয়ে কিশোরগঞ্জের একটি প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া চালিয়ে যান। এর মধ্যে মাদরাসার কাছেই একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন অধ্যক্ষ। এর মধ্যে অধ্যক্ষের স্ত্রী শারমিন আক্তারকে নিয়ে যায় তার পরিবার। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর শারমিনের মা শিপন আক্তার বাদী হয়ে মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন স্বামী- এমন অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা করছেন কেন্দুয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. হাবিবুল্লাহ খান জানান, দুজনের বিবাহ নিবন্ধন করেছেন ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) কাজী আশিক মোস্তুফা। তার নিবন্ধনের বই নিয়ে দেখা যায় পৃষ্ঠা নম্বর ২৮, বালাম নং-১৫ ২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল দুইজনের নিবন্ধন রয়েছে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন কাজী নিজেও। তিনি বলেন,আমার অফিসে এসেই মেয়ের উপস্থিতিতেই বিয়ে কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষের স্ত্রী শারমিন আক্তারের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে ফোনটি ধরেন তার মা শিপন আক্তার। তিনি বলেন,আমার মেয়ের সাথে ওই অধ্যক্ষের বিয়ে হয়নি। যে কাবিননামা দেখানো হচ্ছে তা বানোয়াট ও সাজানো। শারমিনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বলেন, আমি শারমিনকে ইসলামি শরিয়ত মতেই বিয়ে করেছি।
এর মধ্যে শারমিন সন্তানসম্ভাবা হলেও হঠাৎ গর্ভপাত হয়ে যায়। এতো সবের পরেও কেন আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা তদন্তেই প্রকাশ হবে। তিনি দাবি করেন মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের পদ ছাড়াও স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে একটি চক্র এই হীন কাজে লিপ্ত রয়েছে।
রোয়াইলবাড়ি ফাজিল মাদরাসার ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, হুজুর একজন ভালো ও আলেম মানুষ। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা বানোয়টি কাহিনী দুঃখজনক।
https://bd24news.com