প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১, ২০২৪, ৮:৩৬ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২, ২০২০, ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ
ঢাকা, ১ অক্টোবর শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। পরিবেশবান্ধব উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন ও জ্বালানি সাশ্রয়ী সার কারখানা স্থাপন করে দেশের সার উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির বিশ্বমানের সার কারখানা স্থাপন করা হচ্ছে।
শিল্পমন্ত্রী আজ পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় আরাজিগাইঘাটে নব নির্মিত সারের বাফার গোডাউন উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আজ একথা বলেন। পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক ড. সাবিনা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেলপথমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন, পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আনোয়ার সাদাত সম্রাট।
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)’র চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ কে এম হাবিবুল্লাহ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশের সর্বত্র পর্যাপ্ত সার সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। দেশে বর্তমানে বছরে কমপক্ষে ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদার নুন্যতম ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়।
আমদানিকৃত সার দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত বিএডিসি’র ২৫টি বাফার গুদামের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন, নিরাপদ মজুদ নিশ্চিত করতে ২৫ লক্ষ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত আরও ৫ লক্ষ মেট্রিক টন সার মজুদ রাখা হচ্ছে।
সারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি বাফার গোডাউন নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এগুলো ছাড়া আরও ৩৪টি বাফার গোডাউন নির্মাণের উদ্যোগ শিল্প মন্ত্রণালয় গ্রহণ করেছে। উল্লেখ্য, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)’র ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় বাফার গোডাউনটি নির্মাণ করা হয়েছে।
ভরা মৌসুমে সারের মজুদ বৃদ্ধিসহ সুষ্ঠভাবে সার সংরক্ষণ ও বিতরণ এবং ডিলারের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছে সার সরবরাহ সুনিশ্চিত করতে পঞ্চগড়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শেরপুর, যশোর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজবাড়ী, পাবনা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও সুনামগঞ্জ জেলায় বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে পঞ্চগড় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ গোডাউনের নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্মাণ কাজে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটলেও বর্তমানে এই প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় অন্য ১১টি গোডাউন নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে এবং জুন ২০২১ সালের মধ্যে সবকটি গোডাউনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক এ কে এম হাবিবুল্লাহ জানান, এ প্রকল্পের অধীনে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলাধীন আরাজিগাইঘাটা এলাকায় ৩.৯১৮ একর জমির ওপর ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাবিশিষ্ট সারের বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের অধীনে গোডাউনে ৮৮ হাজার ২৩৬ বর্গফুটের প্রি-ফেব্রিকেটেড স্টীল স্ট্রাকচার (তিন বে-বিশিষ্ট)ও ২ হাজার ৮৯৮ বর্গফুটের দু’তলা বিশিষ্ট একটি অফিস বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া ৩ হাজার ২৭৯ বর্গফুটের একতলা বিশিষ্ট একটি সিকিউরিটি ব্যারাক, ৬২২ বর্গফুটের একতলা বিশিষ্ট একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, আনুমানিক ১ হাজার ৭০০ রানিং ফুট বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে।
গোডাউনের চারপাশে ভিতরে সারফেস ড্রেন এবং বাউন্ডারী ওয়াল বরাবর স্টর্ম ড্রেন, অভ্যন্তরে ২টি Soak well, ২টি সেপ্টিক ট্যাংক, ৭৪টি কার্বন ডাই অক্সাইড অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।পরে শিল্পমন্ত্রী ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস পরিদর্শন করেন এবং মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এসময় শিল্প মন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমে চিনিকলগুলোকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলো যাতে বছর জুড়ে উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে সে লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চিনিকল বন্ধ বা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কোনো পরিকল্পনা শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেই।