রাবি প্রতিনিধিঃ
দেশের লাগামহীন নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা চলমান করোনার মহামারী অপেক্ষা যেন ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। দেশের এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতি আজ হতাশ করেছে জাতিকে। ফলে নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো জঘন্যতম এই অপরাধের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষক সমিতি। মঙ্গলবার(১৩ অক্টোবর) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম ফারুকীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল ইসলাম খানের সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম ফারুকী, সহসভাপতি অধ্যাপক মো. সাইয়েদুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আশরাফুল ইসলাম খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. মো. মোজাম্মেল হোসেন বকুল, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হক, আইন বিভাগের অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু প্রমুখসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছেন। নারীরা আজ দেশের কোনো স্থানে নিরাপদ নয়, সব জায়গায় তারা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেশে ধর্ষণের ঘটনার ক্রমবর্ধমান চিত্র ফুটে উঠছে। এমনকি এ থেকে শিশু ও বৃদ্ধা কেউ-ই রেহাই পাচ্ছেন না। বেশ কিছু ঘটনায় ধর্ষণের পর নির্মমভাবে হত্যাও করা হচ্ছে নারী-শিশুদের।
বক্তারা আরও বলেন, ধর্ষণসহ নারীর প্রতি নানা ধরনের নিপীড়ন ও অবমাননাকর ঘটনায় সমাজে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। নারীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এসব ঘটনার কিছু কিছু বিচারের আওতায় এলেও বেশিরভাগ ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর বিচার এবং শাস্তি প্রদানের অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া স্বাধীন বাংলাদেশে এমন নারী-নির্যাতন ও নারী-নিগৃহ একাত্তরের মূল চেতনার পরিপন্থী।
দেশে চলমান সব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমরা সরকারের কাছে নারী নিপীড়নের প্রতিটি ঘটনায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাই।
রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে কেউ যেন নারীদের কোনোভাবে হয়রানি করতে না পারে, তার জন্য সরকারের প্রশাসনযন্ত্রকে সর্বদা সতর্ক থাকার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শুধু আইন কঠোর করলেই চলবে না, আইনের যথাসময়ে সঠিক প্রয়োগও নিশ্চিত করতে হবে।
তারা আরও বলেন, শুধু ধর্ষণকারীকে নয় এর আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের খুঁজে বের করে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনতে হবে।যেহেতু এটি একটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা, তাই এর বিরুদ্ধে সকল শ্রেণির মানুষকে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড সাজা রেখে অধ্যাদেশ জারির জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান বক্তারা।