করোনা টেষ্টের নামে এবং সরকার নির্দেশিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ঢাকা জেলার মধ্য বাড্ডা প্রগতি স্মরণীর মানামা ম্যানশনের ৩য় তলায় গজিয়ে ওঠা জাপান মেডিকেল সেন্টার নামক একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন ক্লিনিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্য বাড্ডার এক বাসিন্দা গত ৭ অক্টোবর করোনা টেষ্ট করতে ওই মেডিকেল সেন্টারের শরণাপন্ন হন। তাৎক্ষনিকভাবে করোনা টেষ্টের সকল উপকরণ মেডিকেল সেন্টার কর্তৃপক্ষ সংগ্রহ করেন এবং এক দিনের মধ্যেই ৮অক্টোবর ওই রোগীকে করোনা নেগেটিভ বলে জাপান মেডিকেল সেন্টারের নামে পিসিআর টেস্ট বিলের ৪ হাজার টাকা পরিশোধের একটি বিল ভাউচার ধরিয়ে দেন। করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে পেয়ে ওই রোগী নিশ্চিন্তে বাসায় যান এবং দু’একদিন পরেই তার গলাব্যাথা, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরসহ শারিরীক অসুস্থ্যতা বোধ করলে রোগীর স্বজনরা পার্শবর্তী একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং ওই হাসপাতাল থেকে করোনা পরীক্ষা করানো হলে তার ফলাফল পজিটিভ আসে।
পরবর্তীতে রোগীর স্বজনরা জাপান মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে ভূয়া রিপোর্টের কথা জানতে চাইলে বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে ও তাদেরকে অপমান জনক কথাবার্তা বলে মেডিকেল সেন্টার থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে রোগীর ছোটভাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে করোনা টেষ্টের জন্য সরকারী অনুমোদনপ্রাপ্ত সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন মেডিকেল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের তালিকা দেখে নিশ্চিত হয় জাপান মেডিকেল সেন্টার নামক কোন প্রতিষ্ঠান তাদের তালিকাভুক্ত নয়।
বিষয়টি তিনি গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, জাপান মেডিকেল সেন্টার নামক প্রতিষ্ঠানটি সরকারী নিয়মনীতির বাইরে এবং কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই অদৃশ্য ক্ষমতাবলে করোনা পরীক্ষার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে একদিনের মধ্যেই করোনা টেষ্টের রিপোর্ট ধরিয়ে দিচ্ছে এবং সাধারণ রোগীদের এক প্রকার মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা আরো জানান, ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে ব্যাঙ্গের ছাতার ছাতার মত গজিয়ে ওঠা ভূয়া মেডিকেল সেন্টারগুলোর প্রতারণা বন্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
জাপান মেডিকেল সেন্টার সংলগ্ন একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সরকারী অনুমতি ছাড়াই বেআইনিভাবে ভূয়া রিপোর্ট সরবারহ করে এবং মেডিকেল সেন্টারের নামে জাপান শব্দটি ব্যবহারের সুযোগকে পুঁজি করে রোগীদের আকৃষ্ট করে এক প্রকার প্রতারনা করে আসছে। তবে জাপান মেডিকেল সেন্টারের মালিক অদৃশ্য ক্ষমতাশীল ব্যক্তি বিধায় কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাপান মেডিকেল সেন্টারে ফোন করা হলে এবং মেডিকেল সেন্টারের মালিক মোঃ জামাল হোসেনের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি রাজি হননি। পরে তার ছোটভাই মোঃ নীরব হোসেন জানান, করোনা পরীক্ষার সরকারী কোন অনুমোদন তাদের ক্লিনিকের নেই। আমাদের ক্লিনিকের বিরুদ্ধে একটি মহলের ষড়যন্ত্র বলেই লাইন কেটে দেন।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার আবু হোসেন মোঃ মঈনুল আহসানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, পিসিআর ল্যাবের তালিকায় ওই ক্লিনিকের নাম না থাকলে অতি দ্রæত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।