ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুটি স্থলবন্দরে ৬ বছর পর শুরু হল কয়লা আমদানি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভারত থেকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টায় সময় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ভারত থেকে কয়লা আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের দীর্ঘ চেষ্টার পর আবারো সচল হতে যাচ্ছে স্থলবন্দর দুটির কয়লা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন দুদেশের ব্যবসায়ীরা।
কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টাস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ এম সুরুজ মিয়া বলেন, দুদেশের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের চেষ্টায় আমাদের স্থলবন্দর দুটিতে আবারো কয়লা আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়েছে। এতে করে সরকার যেমন রাজস্ব পাবে তেমনি ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের হতাশা লাগব হবে।
হালুয়াঘাট স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাসুদ করিম বলেন, এ উপজেলার বেশির ভাগ ব্যবসায়ী কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যাংক ঋণের চাপে সীমাহীন দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। কয়লা আমদানি শুরুর মধ্য দিয়ে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক মন্দা কেটে যাবে।
জানা যায়, উপজেলা সদর ৫ কিলোমিটার দূরে গোবরাকুড়া ও ৬ কিলোমিটার দূরে কড়ইতলী অবস্থিত স্থলবন্দর দুটি ১৯৮৯ ও ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে এই দুটি বন্দর দিয়ে শুধু কয়লা আমদানি-রপ্তানি হতো। ২০১২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর হিসেবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বর্তমানে স্থলবন্দর দুটিতে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর করার লক্ষ্যে উন্নয়নমূলক কাজ চলমান রয়েছে। সরকারি হিসেবে দুটি বন্দরে ৮ শ আমদানি-রপ্তানিকারক ও ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছ।
ভারতের মেঘালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন (ডিমাহাসাও) জেলা ছাত্র ইউনিয়নের মামলার ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল সে দেশের ন্যাশনাল গ্রি ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) আদালত মেঘালয় সরকারকে অপরিকল্পিতভাবে কয়লা খনন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেয়। আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে মাঝে মাঝে কয়লা আমদানি-রপ্তানি চলে আবার তা দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। ফলে একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দর দুটি।
বন্দর দুটির রাজস্ব অফিস সূত্রে জানা যায়, আগে বন্দরে ভারতীয় কয়লা যখন আসত তখন বছরে রাজস্ব ৬০ কোটি টাকার ওপর আদায় হতো।