আসন্ন গলাচিপা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলে নির্বাচন করার আশা ব্যক্ত করলেন গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী মু. মজিবর রহমান।
রাজনৈতিক জীবনের দীর্ঘ ৫৫ বছর পার হওয়ার পরে এই প্রথমবারের মতো জনপ্রতিনিধিত্ব করার এক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার কথা বললেন এক সময়ের তুখোর এই ছাত্রনেতা। জীবনে দলের কাছে কখনো কোন কিছু চাননি। নিষ্ঠা, সততা, দক্ষতা, ত্যাগ ও তিতিক্ষার মধ্যে দিয়ে সর্বদা দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এই পোড় খাওয়া বলিষ্ঠ নেতৃত্বদানকারী রাজনীতিক।
তাঁর সান্নিধ্যে এসে রাজনীতির দীক্ষা নিয়ে উপজেলার শত শত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মী আজ আওয়ামী লীগের বিশেষ বিশেষ পদে অধিষ্ঠিত। অনেকে আবার জনপ্রতিনিধিত্ব করে সুনাম অর্জন করেছেন। বিশেষ করে এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক অকুতোভয় রাজনীতিবিদ মজিবর রহমান। আজ গলাচিপা পৌরবাসী মজিবর রহমানের মত একজন দক্ষ ও বিচক্ষণ নেতাকে পৌর মেয়র হিসেবে দেখতে চায়।
১৯৭৫ সালে জাসদ ছাত্রলীগের গলাচিপা উপজেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে মজিবর রহমানের ছাত্র রাজনীতি শুরু। তিনি ১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের গলাচিপা উপজেলা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। একাধারে তিনি ১০ বছর এই পদে থেকে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে দলীয় কার্যক্রম ও দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেন।
তিনি গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ১৯৯৪ সালে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ১৯৯৭ সালে ও সহ-সভাপতি ২০০৪ সালে নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ২০১৭ সালে গলাচিপা বিআরডিবি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ২বার সদস্য, বিপিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও গলাচিপা এনজেড দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদে থেকে যুবলীগকে সুসংগঠিত করে শত শত যুবলীগ কর্মী নিয়ে লড়াকু সৈনিকের মত রাজপথ কাঁপিয়েছেন যুবনেতা মজিবর রহমান। তৎকালীন সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন। ১/১১ এর সময় গলাচিপায় মজিবর রহমানের নেতৃত্বে প্রথম মিছিল বের হয়।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে সচল রাখতে তিনি মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। একসময় আন্দোলন সংগ্রামের গুরু দায়িত্ব দল তাঁর উপরে ছেড়ে দেয়। তখন তিনি আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরকে নিয়ে গুছিয়ে রাজনীতি করেছিলেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে রাজনীতির হাল ধরে রাখেন এই দাপুটে আওয়ামী লীগ নেতা।
মজিবর রহমান এ অঞ্চলের কারিশমেটিক লিডার। যাঁর অসাধারণ নেতৃত্ব ও দুর্দমনীয় প্রেরণা এ অঞ্চলের শত শত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীকে সঠিক পদ দেখিয়েছে। ত্যাগী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদেরকে মূল্যায়ন করে আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় করার অগ্রণি ভ‚মিকা পালন করেন দক্ষিণের জনপ্রিয় নেতা মজিবর রহমান।
১৯৭৫ পরবর্তী আওয়ামী রাজনীতির দুুর্দিনে তাঁর নেতৃত্বে এ অঞ্চলের যুবলীগ সংগঠিত করার মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেছিলেন। তাঁর রাজনীতির ফসল - এক ভাই গলাচিপা সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ও দুইভাই জিএস ছিলেন।
তারাই পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে গলাচিপা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেন। তাঁর ছোটভাই মু. শাহীন শাহ গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও গলাচিপা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। মজিবর রহমান জানান, বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় প্রার্থী বাছাই করা হয় সে প্রক্রিয়ায় তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী নন।
কারন টাকার বিনিময়ে নেতা-কর্মীদের ভোট কিনে প্রার্থী হওয়া বিবেকে বাধে। যদি প্রধানমন্ত্রীর একক সিদ্ধান্ত অথবা অন্য কোন গোয়েন্দা সংস্থার জরিপের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হয় সেক্ষেত্রে তিনি নির্বাচন করার আশাবাদী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মজিবর রহমান তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করার যথাযথ চেষ্টা করেছি। ব্যক্তিগতভাবে আমার দলের কাছে চাওয়ার কিছুই নেই। দল যে সিদ্ধান্ত নিবে সেটাই আমার সিদ্ধান্ত।’