November 23, 2024, 2:45 pm
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

বাগেরহাটে অযত্নে পড়ে থাকে বধ্যভূমি-স্মৃতিস্তম্ভ গুলো

আবু হানিফ, বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
  • 286 দেখুন

বাগেরহাটে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক-হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকারবাহিনী সবচেয়ে বড় গণহত্যা চালায় রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা গ্রামে।ওই বছরের ২১ মে গুলি ও গলাকেটে দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়।এছাড়া কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি,জেলা শহরের ডাকবাংলো ঘাট ও সদর উপজেলার কান্দাপাড়ায় নিরস্ত্র বাঙালিদের একইভাবে হত্যা করে তারা।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এসব স্থানে বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও বছরের অধিকাংশ সময়ই সেগুলো অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি,শুধু স্বাধীনতাবিষয়ক জাতীয় দিবসগুলোতে এগুলো ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়,বকি সময়ে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ময়লা স্তুপ জমে থাকে।

১৯৯৭ সালে বাগেরহাট শহরের ভৈরব নদের তীরের একটি জয়গাকে ‘ডাকবাংলো বধ্যভূমি’ হিসেবে চিহ্নিত করে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হয়।ফলক উন্মোচনের ২১ বছর পর ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছয় লাখ টাকা ব্যয়ে বধ্যভূমিটিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।

অবহেলিত বাগেরহাটের একটি বধ্যভূমি বীর মুক্তিযোদ্ধা নকীব সিরাজুল হক ও বাগেরহাট প্রেস ক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি নীহার রজ্ঞন সাহা বলেন,‘পাক হানাদারদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে সেদিন বাগেরহাটের মুক্তিযোদ্ধারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাসহ বাগেরহাটের অসংখ্য মানুষ রাজাকারদের হাতে খুন হন।আমাদের পার্শ্ববতী শাঁখারীকাঠি রাজাকারেরা এখানে অসংখ্য মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করে মরদেহ খালে ভাসিয়ে দেয়,তাদের আত্মত্যাগের জন্য আজ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি।তাদের স্মৃতির উদ্দেশে সরকার বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিত করে সেখানে স্মৃতিফলক নির্মাণ করেছে।কিন্তু এই সব স্থানগুলো,বলতে গেলে সারাবছরই পড়ে থাকে অযত্নে-অবহেলায়।’

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি ডা. মোশারফ হোসেন ও বাগেরহাট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারন সম্পাদক সরদার সেলিম আহম্মেদ বলেন, ‘ডাকবাংলোর বধ্যভূমিটি অন্যতম কসাইখানা হিসেবে পরিচিত।রাজাকারেরা এখানে অসংখ্য মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করে মরদেহ ভৈরব নদে ভাসিয়ে দেয়।১৯৯৭ সালে স্থানীয় প্রশাসন এখানে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করে।কিন্তু ওই ফলক উন্মোচনের ২০ বছর পার হলেও জায়গাটি এখনও উন্মুক্ত পড়ে আছে।এখন সংরক্ষণ করা হয়নি।’আগামী প্রজন্মের তরুণদের জন্য এই স্থানে অবিলম্বে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার দাবি জানান এই নেতাদ্বয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুদ্ধকালীন প্রায় পুরো সময়জুড়ে বাগেরহাট শহরের মদনের মাঠের ওয়াপদা রেস্টহাউজ চত্বর,সুপারি পট্টির রসিক পরামাণিকের বাসভবন,মোজাম ডাক্তারের চেম্বারের পিছনে নদীর ঘাট,কচুয়া উপজেলার শাঁখারীকাঠি,মঘিয়া,কান্দাপাড়া বাজার,দেপাড়া,মুক্ষাইট,বিষ্ণুপুর, রণজিতপুর,চুলকাঠি;মোরেলগঞ্জের তেলিগাতি,তেঁতুলবাড়ীয়া,লক্ষ্মীখালী,চিতলমারীর দশমহল; শরণখোলার বগীসহ অর্ধশতাধিক স্থানে গণহত্যার ঘটনা ঘটে।এসবের বেশিরভাগ জায়গায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছে।তবে এগুলো নিয়মিত দেখাশোনা করার লোক নেই বললেই চলে।

রামপাল উপজেলার বাশতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মাদ আলী,ও পেরিখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল জানান,ডাকরার যে স্থানে গণহত্যা চালনো হয়েছিল সেখানে ৭-৮ বছর আগে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়।যা নিয়মিত দেখাশোনা করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে।

অযত্নে বধ্যভূমি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বাগেরহাট উপজেলা কমান্ডার মো: শওকত হোসেন বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাগেরহাটে অন্তত সাতশ’ মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। বাগেরহাটের প্রায় সব বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভগুলো সারাবছর অবহেলায় পড়ে থাকে।কোনও দিবস এলেই কেবল সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন,‘বাগেরহাটে শহীদের স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভগুলো সংরক্ষিতই রয়েছে। এসব বধ্যভূমি ও স্মৃতিস্তম্ভগুলোর প্রতি জেলা প্রসাশনের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।’জেলার সবগুলো বধ্যভূমি সারাবছর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের পাশাপাশি সবাইকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102