মনোহরদীতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির চুল্লি বিনষ্ট করলো ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ সোমবার খিদিরপুর ইউনিয়নের ডোমনমরা গ্রামে দিনব্যাপী কোর্ট পরিচালনা করে কয়লা তৈরীর চুল্লী বিনষ্ট করা হয় এবং কয়লা ও কাঠ সরকারী হেফাজতে নিলামের উদ্দেশ্যে জব্দ করা হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন এর নির্দেশে এবং মনোহরদী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিয়া আক্তার শিমুর সার্বিক তত্ত্বাবধানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হাসান এর নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়।
জানা যায়, উপজেলায় অবৈধভাবে চুল্লি তৈরি করে অবাধে কাঠ পুড়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। আর এসব কয়লা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসাধূ এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায় এসব চুল্লি তৈরিতে কোন প্রকার অনুমতি মালিক পক্ষ কারো কাছ থেকে নেয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন গ্রাম থেকে গাছের গুড়ি এনে চুল্লিতে কাঠ সরবরাহ করা হয়।
উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের ডোমনমারা গ্রামের রাস্তার পাশে তারা মাষ্টারের জমিতে ৫টি চুল্লি নির্মান করে অবাধে গাছ পুড়ে কয়লা তৈরি করছেন। একই গ্রামে আরো ৫টি চুল্লির নির্মান কাজ চলছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠছে ১০টি কয়লা তৈরির বিশেষ ধরনের চুলা। দিন রাত এই চুলায় আগুন দেয়া থাকে। রাস্তার পাশ হওয়ায় পথচারীরা ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একদিকে ধংশ হচ্ছে বনজ সম্পদ পাশাপাশি সৃষ্ট ধোঁয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্ট জনিত নানা ব্যাধি। পবিবেশ ও জীববৈচিত্র্যেরও মারাত্বক ক্ষতি হচ্ছে। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তালতলী গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে কবির হোসেন ও একই এলাকার সিরাজ উদ্দিনের ছেলে শফিকুল দুইজন মিলে নিরাপদ স্থান হিসেবে এই এলাকাকে বেছে নিয়ে গড়ে তুলেছে ১০টি কয়লা তৈরির চুল্লি। তারা প্রশাসনক ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে যাচ্ছে।
অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব কয়লার কারখানায় দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে দেশীয় ফলজ, বনজ ও ঔষধী গাছ। নেই পরিবশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন। শত বিধিনিষেধ থাকার পরও জনবসতি এলাকায় ও ফসলি জমি নষ্ট করে এসব কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। মাটি ইট ও কাঠর গুড়া মিশিয় তৈরি করা চুল্লিতে প্রতিদিন শতশত মন পোড়ানা হয়।
কয়লা ব্যবসায়ী কবির হোসেন ও শফিকুলের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কাঠ পুড়ে কয়লা করাতে এলাকার তেমন কান ক্ষতি হয় না। তাছাড়া এলাকার লোকজনকে মেনেজ করেই কাঠ পুড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে খবর পেয়ে মনোহরদী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইকবাল হাসান ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে সেখানে থাকা সকল কয়লার চুল্লি ভাংচুর করে দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে ৫০ বস্তা কয়লা উদ্বার করে সরকারি হেফাজতে নিয়ে আসেন বলে জানান তিনি।
এ সময় মনোহরদী থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম, খিদিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, উপজেলা নাজির, সাংবাদিকবৃন্দ ও স্থানীয় মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।