কুড়িগ্রামে ছাত্র লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও স্থানীয় একটি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান মিন্টুর ওপর নৃশংস হামলায় তার শরীর থেকে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করাসহ হাত ও পায়ে গুরুতর জখমের অভিযোগে হওয়া মামলার প্রধান আসামি মেহেদী হাসান বাঁধনের ‘বেপরোয়া’ হওয়ার পেছনে অতীতের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা পরিষদ হল রুমে অয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে গত ১৬ মার্চ দুপুরে জেলার রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকায় সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিন্টু। এতে তার ডান হাতের কবজি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং অপর হাত ও দুই পা গুরুতর জখম হয়। বর্তমানে মিন্টু ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ( পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বাঁধনসহ ছয়জন জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। পরে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) মিন্টুর বাবা আলতাফ হোসেন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় বাঁধনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। তবে গত তিন দিনেও কোনও আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আতাউর রহমান মিন্টু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলীর আপন ভাগিনা। মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমদ মঞ্জুকে দায়ি করে আসছে আসছে একটি পক্ষ।
নিজের ওপর দায় চাপানোর নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু বলেন,‘ সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত শত্রæতার কারণে মিন্টুর ওপর ন্যাক্কার জনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং বাঁধনসহ অভিযুক্ত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। কিন্তু এই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার হীন চেষ্টার নিন্দা জানাই।’
ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনাটি নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি করে রাজনৈতকি স্বার্থ চরিতার্থ করা অপচেষ্টা হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন,‘ যা ঘটেছে তা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। দীর্ঘ দিনের ব্যক্তিগত দ্ব›দ্ব ও পূর্ব শত্রতার কারণে ঘটে যাওয়া একটি পৈশাষিক ঘটনাকে দলীয় পর্যায়ে জড়ানো কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়। এতে করে দল খাটো হয়, নেতৃত্ব খাটো হয়ে যায়।’
মিন্টুর ওপর হামলার ঘটনায় হওয়া মামলায় কয়েকজন নির্দোষ ও সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক কর্মীকে জড়ানো হয়েছে দাবি করে মঞ্জু বলেন,‘ প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এটা আমি চাই। কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে নির্দোষ কাউকে জড়ানোর নিন্দা জানাই।’
দীর্ঘ দশ বছর ধরে অভিযুক্ত মেহেদী হাসান বাঁধনের সন্ত্রসী কর্মকান্ড কেন রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করা হয়নি,
জেলার রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করার আহŸান জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ওবায়দুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজু, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মোতালেব, হাসান মাসুদ মুকুট, যুবলীগ নেতা গোলাম মওদুদ সুজন প্রমুখ।
ছবি মেইলে