লকডাউনে গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হওয়ার পর চেকপোস্টে পরিচয় পত্র দেখতে চাওয়ায় পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা সেই নারী চিকিৎসকের পরিচয় মিলেছে।
জানা গেছে, ওই চিকিৎসকের নাম ডা. সাঈদা শওকত জেনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সহযোগী অধ্যাপক কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরবিক্রম শওকত আলী সরকারের কন্যা৷
বীর বিক্রম শওকত আলীর পরিচয় অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। দু’বার ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার পাশাপাশি ৪ বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৭১ সালে বীর বিক্রম শওকত আলী সরকার ১১নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মানকারচর সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরবিক্রম খেতাব প্রদান করে।
ডা. সাঈদা শওকত জেনির গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের চিলমারীর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়ারীতে। মায়ের নাম খালেদা খানম। মা-বাবা, ৪ বোন ও ২ ভাই নিয়ে তাদের পরিবার।
প্রসঙ্গত, রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে করোনাকালীন ডিউটি শেষে বাসায় ফেরার পথে এলিফ্যান্ট রোডে চিকিৎসক সাইদা শওকত জেনির ব্যক্তিগত গাড়ি থামান নিউমার্কেট থানার ওসি এসএ কাইয়ুম। তখন তার গাড়িতে সাঁটানো ছিল বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের স্টিকার, গায়ে ছিল চিকিৎসকদের অ্যাপ্রোন।
তবুও তার কাছে পরিচয়পত্র চাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন দু’জনই। তখন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় পুলিশের সহযোগিতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট তার গাড়ি থামিয়ে পরিচয়পত্র দেখতে চান। বারবার অনুরোধ করেও তার কাছ থেকে পরিচয়পত্র দেখতে পাননি উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেন চিকিৎসক জেনি। তিনি পুলিশ সদস্যদেরকে তুই তোকারি করতেও দেখা যায় ভিডিওতে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বাকবিতন্ডার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে চিকিৎসক জেনি বলেন একজন চিকিৎসক হিসেবে যতটুকু সম্মান পাওয়ার কথা ছিলো তা পাননি৷ সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত থাকলেও তাকে কেউ সহযোগিতা করেননি, বরং ভিডিও করে তা কেটে কেটে সাইটে আপলোড করেছেন। একজন চিকিৎসক হিসেবে তার আজকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি নিয়ে সে বিস্মিত। দেশ ছেড়ে চলে যেতে চান চিকিৎসক সাইদা শওকত জেনি।