কুড়িগ্রামে এ্যাপস ব্যবহার করে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ক্রিকেট খেলার উপর মোবাইলে বাজি ধরার সময়কালীন ৩জনকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সদর থানা পুলিশ মশিউর রহমান (৩৪), সাদেকুর ইসলাম (২২) ও মাহবুবার রহমান মাহবুব (২৮) নামে তিন বাজিকরকে আটক করে।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয় কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আটককৃতদের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ৩০/৩৫ এবং জুয়া আইন ৪/৫ ধারায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল কুমার রায়সহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুড়িগ্রাম পৌরসভাধীন কলেজমোড়স্থ ভাই ভাই ডিজিটাল স্টুডিও হতে বাজিকর মশিউর রহমানকে আটক করা হয়। এসময় তার ব্যবহ্নত এন্ড্রোয়েড মোবাইলে ‘সাট স্পোর্টস’ নামের একটি এ্যাপসের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করা হচ্ছিল। তার সাথে বাজিতে সম্পৃক্ত ছিল ১১২জন মেম্বার। মোবাইলে সেসময় ট্রানজেকশন করা হয়েছে ৩৯ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা এবং ব্যালান্স ছিল ৩ লক্ষ ৩৩ হাজার ১১৫ টাকা। মশিউর রহমান স্বীকার করে সে একজন সাব এজেন্ট। মূল এজেন্টের অধীনে কুড়িগ্রামে ৭ থেকে ১০জন সাব এজেন্ট হয়ে কাজ করছে। পরে পুলিশ তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপর এজেন্ট সাদেকুর ইসলামকে শহরের বাণিয়াপাড়া মোড় থেকে এবং বাজিকর মাহবুবার রহমান মাহবুবকে শহরের কৃঞ্চপুর চড়–য়াপাড়া এলাকা থেকে আটক করে।
তিনি আরও জানান, একজন সাব এজেন্ট ১লক্ষ টাকা লেনদেন করলে ৭ হাজার টাকা কমিশন পায়। এছাড়াও জিতলেও পার্সেন্টেজ দেয়া হয়। সাব এজেন্ট মাহবুব জানান, মার্চে তার ৪১জন ক্লায়েন্টের মাধ্যমে ৭লক্ষ টাকা লেনদেন করেছে। শুধু আইপিএল নয়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লালিগাসহ বিভিন্ন খেলাধুলার উপর এই বাজির খেলা পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে। এই ধ্বংসাত্মক বাজির নেশায় জড়িয়েছে জেলার তরুণ সমাজ।
আটক মশিউর রহমান সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের বিশ্বের গ্রামের আব্দুল মজিদ সরকারের পুত্র। সাদেকুর ইসলাম পৌরসভা এলাকার পলাশবাড়ী বাণিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের পুত্র এবং মাহবুবার রহমান মাহবুব পৌরসভা এলাকার কৃঞ্চপুর চড়ওয়াপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের পুত্র।
পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে সদর থানার সাব ইন্সপেক্টর জিয়াউর রহমান বাদী হয়ে আটকৃতদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ৩০/৩৫ এবং জুয়া আইন ৪/৫ ধারায় মামলা করেছে। মূল এজেন্ট ও অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।