ময়মনসিংহের গৌরীপুরে শতবর্ষী কদবানুর ভাগ্যে জুটেনি সরকারি কোন সাহায্য বয়স্ক কিংবা-বিধবা ভাতা। গৌরীপুরের রামগোপালপুর ইউনিয়নের পুম্বাইল গ্রামের মৃত মহর উদ্দিনের স্ত্রী। স্বামীর ভিটেমাটি নেই, নেই বাপ-দাদার সম্পদও। ধীরে ধীরে ছেলে-মেয়েও সরে যাচ্ছেন! শেষ বয়সে সন্তানের এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই বৃদ্ধা। আশ্রয় নিয়েছেন চতুর্থ মেয়ে ছোলেমা খাতুনের বাড়িতে।
বিত্তশালী আর ক্ষমতাবানদের ঘরে ঘরে বয়স্ক-বিধবা ভাতার কার্ড পৌঁছলেও শতবর্ষী এই বৃদ্ধা-মায়ের ঘরে আজও টোকা মারেনি। পাটখড়ির বেড়া আর টিন শেডের নিচে থাকেন শতবর্ষী এই বৃদ্ধা।
জনপ্রতিনিধিদের দ্বারেদ্বারে বারবার ছুটে গেছেন একটি কার্ডের জন্য, হবে হবে বললেও হয়নি কদবানুর কার্ড। তার মেয়ে ছোলেমা খাতুনের প্রশ্ন,আর কতো বয়স হলে আমার মা বয়স্কভাতা পাবে?
ছোলেমা খাতুনের বয়স ৬২ বছর। তার স্বামী শাইনুদ্দিন। তার বাড়িও একই গ্রামে। বয়সের ভারে অনেকটা তিনিও নুয়ে পড়েছেন। কিডনিসহ নানা রোগে আক্রান্ত। ভিটেমাটি ছাড়া নেই কোনো সম্বল। তারপরেও সামর্থ্যানুযায়ী শাশুড়িকে দেখভাল করে যাচ্ছেন। ছোলেমা খাতুনের সংসারে রয়েছে ৫ ছেলে আর ১ মেয়ে।
শতবর্ষী কদবানু লাঠি ভর করে এখন ছুটছেন সাহায্যের জন্যে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি। মেয়ের বাড়ি গিয়েও খোঁজ পাওয়া যায়নি কদবানুর। আর কদিন পরেই ঈদ, সে জন্য শুভানুধ্যায়ীদের দ্বারেদ্বারে এই বয়সেও ছুটছেন।
এক পা এগুলে, আরেক পা এগুতে কষ্ট হয়, কাঁপে হাত-পা। তারপরেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা রাখছেন তিনি।
কদবানুর প্রতিবেশী মিরাজ আলীর পুত্র মো. হাবিবুর রহমান (৬০) জানান, কদবানুর বয়স একশত পেরিয়ে ৭-৮ বছর হবে। তবে জন্ম নিবন্ধনে কদবানুর জন্ম দেখানো হয়েছে ১৯২৭ সালের ২২ মার্চ।
বয়সের ভারে ন্যুব্জ কদবানু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর নিকট একটি শক্ত ঘরের আকুতি জানান। তিনি এখন কানেও কম শোনেন, হাঁটতেও পারেন না। ক্ষোভে দুঃখে কষ্টে বললেন, ‘কতো মানুষের মরণ হয়, আমার তো মরণও হয় না।
শতবর্ষী এই বৃদ্ধার নামে সরকারের কোনো সাহায্য তালিকায় তার নাম নেই।