টিলা ও পাহাড় কাটার মতো মাধবপুর উপজেলার ৫টি চা বাগানে অবাধে নিধন হচ্ছে গাছপালাও। এতে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। জীবজন্তু হারাচ্ছে তাদের আবাসস্থল। খাবার সংকটে লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন প্রাণী। গাছপালা নিধনে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ। মাধবপুর উপজেলায় প্রায়ই বানরের উৎপাত শোনা যায়। খাবারের সন্ধানে তারা মানুষের বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছেন, বন উজাড়, পাহাড়-টিলা কাটা ও শহরের পরিধি বিস্তৃতির ফলে বন্যপ্রাণী লোকালয়ে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে। মাধবপুর শহর ছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
মনতলা শাহজাহাল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক আক্তার হোসাইন জানান, অহরহ বছরে এরকম শতাধিক ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় মানুষের আচরণ হওয়া উচিত প্রাণিবান্ধব। অন্যথায়, ভবিষ্যত সংকট ঘনিভূত হবে।’ পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশ-এর প্রধান সমন্বয়ক এনামুল কবির বলেন, মাধবপুরে পরিবেশ যেভাবে ধ্বংস হচ্ছে, আমরা সন্দিহান আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলো বসবাসযোগ্য পৃথিবী পাবে কিনা। মানুষ নিজেদের স্বার্থে পরিবেশের বিপদ ডেকে আনছে।’তিনি বলেন,‘গত কয়েক বছরে মাধবপুরে শতাধিক প্রজাতির পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণী বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি এলার্মিং। এর জন্য দায়ী আমরা মানুষ। সংরক্ষিত বিশেষ ধরনের বন হওয়া সত্তে¡ও সেখানে পর্যটনের নামে বন ধ্বংস হচ্ছে। একদশক আগে শতাধিক প্রজাতির প্রাণী থাকার কথা বলা হলেও এখন ১০ প্রজাতির প্রাণী পাওয়া যাবে না।’ বৃষ্টিতে পাহাড়-টিলা ধসে এবং স্রোতের সঙ্গে নদ-নদী ও হাওরে গিয়ে পড়ে। তেলমাছড়া, ত্রিপুরাছড়া, চন্ডিছড়া, লাওয়াছড়া সহ বেশ কয়েকটি ছড়ায় বিশাল বিশাল চর জেগে উঠে। এ অবস্থায় শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ ব্যাহত হয়। পানি সংকটে পড়ে কৃষি। অপরদিকে, বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নামা পানি নামতে পারে না। প্রবাহ ঠিক না থাকায় নদনদী ও খাল-বিলে পানি আটকে যায়। দীর্ঘস্থায়ী হয় জলাবদ্ধতা এবং বন্যা দেখা দেয়। নদী গবেষক ও সেভ দ্য হ্যারিটেজ এর প্রতিষ্ঠাতা এনামুল হক বাবু বলেন, প্রাকৃতিক কারণে ছড়াগুলো মরে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকট আর বর্ষায় জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। এ নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই। এখনই পরিকল্পিত উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যত হবে অন্ধকার।’ নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে পানি দূষণও বাড়ছে। বিষাক্ত হচ্ছে জল। বিভিন্ন সময় নদী ও হাওরে মাছ মরে ভেসে ওঠার খবর পাওয়া যাচ্ছে। মাধবপুর উপজেলার গৃহস্থলী ও মেডিকেল বর্জ্য ছড়ায় দিয়ে এসব বিষাক্ত বর্জ্য নদনদীর মাছের খাদ্যে পরিণত হচ্ছে সেই মাঠ আবার মানুষ খাচ্ছে বিষয়টি সত্যিই ভয়ংকর। উজানে ভারত থেকে প্রবাহিত ছড়াগুলোতে পানি নীল হয়ে যাওয়ার ঘটনাও পরিবেশ দূষণের একটি বড় উদাহরণ মনতলা শাহজালাল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক সারুয়ার হাজারী বলেন, একটি গবেষণায় দেখা গেছে ঢলের সময় উজান থেকে ভারি শিল্পবর্জ্য নেমে আসে। এসব বর্জ্য পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য হুমকির মুখে