খড়কুটা ছেড়ে পল্লী গ্রামের মানুষরা ছুটছে এলপিজির গ্যাস সিলিন্ডারের দিকে। করোনাকালীন সময়েও থেমে নেই এলপিজির গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি। দাম বেশি হলেও পল্লী গ্রামের মানুষরা ঝুঁকছে গ্যাসের দিকে। সরকার ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে কিন্তু হবিগঞ্জের মাধবপুরে সরকারি দামে মিলছে না জ্বালানি পণ্যটি। প্রত্যেকটি গ্যাস সিলিন্ডার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০০ টাকা বেশিতে বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিন মাধবপুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সব ধরনের এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের সরবরাহ রয়েছে। তবে সব কোম্পানির গ্যাস সিলিন্ডার বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্র্যান্ড ও মানভেদে প্রতিটি এলপিজি সিলিন্ডার ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এসব গ্যাস সিলিন্ডারের দাম সাড়ে ৮০০ টাকা ছিল।
আরো আগে ৯৫০ টাকা করে পণ্যটি বিক্রি হয়েছিল। স¤প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের নতুন দাম ৮৯১ টাকা নির্ধারণের এক প্রজ্ঞাপন জারি করে, যা জুলাই থেকে কার্যকর করা হয়। এর আগে জুনে সরকারি দাম ছিল ৮৪২ টাকা। মে মাসের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯০৬ টাকা। মাধবপুর বাজারের মোঃ গফুর মিয়া বলেন, এক সপ্তাহ আগেই এলপিজি কিনেছি ৯০০ টাকায়। কয়েক দিনের ব্যবধানেই তা এক লাফে বেড়ে ১ হাজার টাকা হয়ে গেছে। মহামারীর কারণে এমনিতেই সংকট চলছে। তার ওপর এলপিজির দাম বাড়ায় আমাদের মতো ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। করোনার দোহাই দেখিয়ে লকডাউনের অজুহাতে এলপিজির গ্যাস বিক্রি করিয়া লক্ষ লক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে অসহায় হয়ে পড়েন পল্লী গ্রামের মানুষরা। মাধবপুর বাজারের ডিলাররা বলেন, কোম্পানির ডিও রেট ১ হাজার টাকা। আমরা সেই দামেই গ্যাস বিক্রি করছি। বিইআরসি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। ফলে কোম্পানিগুলো সরকারি সিদ্ধান্ত না মেনে আদালতে রিট করেছে। মাধবপুর বাজারের আরেক ব্যবসায়ী অমর দেবনাথ বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের সঙ্গে আমাদের বিক্রির রেট মিলবে না।
কোম্পানির প্রতিটি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার টাকা। সব কোম্পানিই এ দামে বিক্রি করছে। আমরা সরকারের সিদ্ধান্ত মানছি না তা নয়, আমরা সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কিন্তু আমাদের যে কস্টিংগুলো আছে এখানে সেগুলো অ্যাড করা হয়নি। ফলে ৭ জুলাই একটি গণশুনানি হওয়ার কথা ছিল, করোনার কারণে হয়নি। গণশুনানি হলে পর্যায়ক্রমে দামের তারতম্য ঠিক হয়ে যাবে। মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মঈনুল ইসলাম বলেন, দাম যদি খুচরা পর্যায়ে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে বেশিতে বিক্রির সুযোগ নেই। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।