হবিগঞ্জে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরী অবকাঠামো উন্নত না হওয়ায় সেখানে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহ হারাচ্ছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। যে কারণে প্লট বরাদ্দ নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রেখেছেন পতিত কর্তৃপক্ষ বলছে বিসিকের সকল সমস্যা সমাধানে এক কোটি টাকা বাজেট দরকার। এছাড়া ফেলে রাখা প্লটগুলো বাতিলের কাজও প্রকৃয়াধিন রয়েছে হবিগঞ্জ বিসিক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে হবিগঞ্জের ধুলিয়াখাল এলাকায় ১৫ একক জায়গা নিয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) শিল্পনগরী চালু হয়, সেখানে মোট ৬৮টি প্লট রয়েছে এর মধ্যে ৫১টিতে বাস্তবায়িত শিল্প ইউনিট গড়ে উঠেছে যেখানে বর্তমানে কারখানা চালু রয়েছে ৪৪টি এবং ৫টি বন্ধ রয়েছে।
প্লট বরাদ্দ পাওয়া বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাছে মোট ৩৪ লাখ ২ হাজার টাকা বকেয়া পড়ে আছে বিসিক কর্তৃপক্ষের বকেয়ার মধ্যে রয়েছে জমির কিস্তি ১৫ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮৮ টাকা, সার্ভিস চার্জ ১৭ লাখ ১৯ হাজার ১৮৭ টাকা এবং খাজনা বাবদ ১ লাখ ১৮ হাজার ২৫৮ টাকা শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন বিসিকের ভেতরে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে যে কারণে এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে লোকসানের পড়তে হয়েছে তাদের যে কারণে অনেক উদ্যোক্তা জমি কিনেও কারখানা না করে পতিত ফেলে রেখেছেন বিসিকের ভেতরে ময়লা আবর্জনায় ভরে আছে ড্রেনগুলো
বিসিকে ব্যবসায়ি শংকর পাল বলেন ‘হবিগঞ্জ বিসিকের ভেতরে রাস্তা-ঘাটের অবস্থা নাজুক।
একাধিক কালভার্ড ভাঙা নেই বিসিকের চাপাশের বাউন্ডারি যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরির ঘটনা একই সাথে পণ্য উৎপাদের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা এখানে নেই প্রতিটি কারখানার মালিককে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, এতে একদিকে যেমন অতিরিক্ত অর্থ ব্যায় হচ্ছে তেমনি বাড়ছে দূর্ভোগও হবিগঞ্জ বিসিক শিল্প নগরীর ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিসিক শিল্প মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মীর জমিলুননবী চৌধুরী ফয়সল বলেন হবিগঞ্জ সিসিক বলতে গেলে একরকম অভিভাবকহীন। এখানে সমস্যার কোন শেষ নেই অথচ সমস্যাগুলো দেখারও যেন কেউ নেই রাস্তা ভাঙা পানির ব্যবস্থা নেই বিসিকের চারপাশের বাউন্ডারি দেয়াল নেই।
যখন তখন গরু-ছাগল ঢুকে যাচ্ছে সেই সাথে চোরের উপদ্রবতো আছে ড্রেনগুলো ময়লা আবর্জনায় ভরে রয়েছে। যে কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় তিনি বলেন এটি যেহেতু শিল্প নগরি এখানে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দিয়ে কাজ হয় এখানে গ্যাস বিদ্যুৎ রয়েছে যে কোন সময় একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে আগুন নিয়ন্ত্রণের জন্য এখানে পানির ব্যবস্থা নেই। যেমন পানির পাম্প নেই, তেমনি আশপাশে নেই কোন পুকুর জলাশয়ও, এক যুগ ধরে নষ্ট পানির পাম্প হবিগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরির ব্যবসায়িদের সংগঠন ‘বিসিক শিল্প মালিক সমিতি’র সভাপতি মো. দেওয়ান মিয়া বলেন, বিসিকের পানির যে পাম্পটি রয়েছে সেটি ২০১২ সাল থেকে নষ্ট অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে কারণে পানির সমস্যা নিয়ে আমরা নাজেহাল অবস্থায় আছি।
এ ব্যাপারে আমাদের ব্যবসায়িদের পক্ষ থেকে এবং সংগঠনের পক্ষ থেকেও বারবার পরিচালনা কমিটির সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন সমাধান দিতে পারেননি একই কথা স্বীকারও করেছে কর্তৃপক্ষ শিল্পনগরির সহকারি ব্যবস্থাপক নাজমুল হোসেন বলেন প্রায় এক যুগ আগে বিসিকের ভেতরে থাকা পানির পাম্পটি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আর সেখানে কোন পাম্প বসানো হয়নি। রাস্তা-ঘাট সংস্কার ও বাউন্ডারির নির্মাণের বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে তারা জানিয়েছে ব্যবসায়িরা লিখিতভাবে আবেদন করলে বিষয়টি দেখা যাবে।
তিনি বলেন বিসিকের চারপাশেবাউন্ডারি রাস্তা ও ড্রেনের জন্য ৫০ লাখ টাকা বাজেটের প্রয়োজন এছাড়া পানির পাম্প চালু করতে প্রয়োজন আরও ৫০ লাখ টাকা অর্থাৎ বিসিকের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য এক কোটি টাকা বাজেট প্রয়োজন, আমরা বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করেছি বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা সম্ভব হবে এছাড়া ফেলে রাখা প্লটগুলো বাতিলের কাজও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।