হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় গ্রামীণ জনপদে প্রতিদিন জমজমাট জুয়া খেলার আসর বসে। সেখানে তাস মোবাইল, কয়েন, লুডুসহ বিভিন্ন খেলার মাধ্যমে পরিচালিত হয় জুয়ার আসর। হাতের নাগালে এসব আসর থাকায় জুয়ার নেশায় সেখানে সর্বস্ব খুইয়ে নিঃশ্ব হচ্ছে এলাকার শত শত মানুষ সারা দেশের ন্যায় এ জেলার মানুষও করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক হাটবাজার ও পথে প্রান্তরে কাজ করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এই সুযোগে এলাকার সংঘবদ্ধ জুয়ারিরা গ্রামের ফাঁকা মাঠ, পরিত্যক্ত ঘর, গাছের বাগান, বাঁশঝাড় ঝোপ-জঙ্গল পাহাড়ারে টিলে পরিচালনা করছেন এসব জুয়া খেলা।
করোনার সংক্রমণরোধে এলাকার হাটবাজার দোকানপাট, চা স্টলসহ সকল প্রকার আড্ডা বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন সব ধরনের বিনোদনও বন্ধ রয়েছে লোকজন অনেকটাই ঘরমুখী। কর্মহীন মানুষগুলো বাড়িতে বসে অলস সময় পার করছেন। গ্রামের অসাধু ব্যক্তিরা এই অলস সময়কে কাজে লাগাচ্ছেন জুয়া খেলে এসব জুয়ার আসরে সামাজিক নিরাপদ দূরত্ব সুরক্ষা হচ্ছে না অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাধবপুর উপজেলার আদাঐর ইউনিয়নের মিঠাপুকুরে ১১নং বাঘাসুরা ইউনিয়নের শাহপুর ও হরিতলাসহ আশপাশের বেশ ক’টি গ্রামে লাখ লাখ টাকা নিয়ে বসে জমজমাট জুয়ার আসর মধ্য ও স্বল্প আয়ের পরিবারের লোকজন এসব আসরে আসেন উপার্জনের যাবতীয় টাকা ছাড়াও অনেকেই সংসারের জিনিসপত্র বন্ধক রাখাসহ বউ-ঝির গহনা বিক্রি করে জুয়া খেলে থাকেন।
জুয়াড়িরা প্রকাশ্য দিবালোকে এই আসর বসায় জুয়ার প্রভাবে ওই এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি-ছিনতাই, কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নীরব রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের স্থানীয়রা জানান, প্রকাশ্য দিবালোকেই বসে জুয়ার আসর এখানকার কয়েকজন প্রভাবশালীর নেতৃত্বে বসে এসব জুয়ার আসর তাছাড়া জনপ্রতিনিধিরা রয়েছে নেতৃত্বে,শাহপুর-হরিতলা গ্রামের পুর্ব দিকে রঘুনন্দন পাহাড়ের ভিতরে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে জুয়ার আসর। সন্ধার পর বিভিন্ন বাড়ি কিংবা হাওরে বা পুকুর পাড়েও এসব আসর বসে থাকে। জুয়ার প্রলোভনে পড়ে দূর-দূরান্ত থেকে পেশাদার জুয়াড়িদের সঙ্গে আসা সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীরা জুয়ার বোর্ডে ব্যবসার তহবিলসহ টাকা-পয়সা হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান ওই স্পটে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। জুয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা প্রভাবশালী দুর্ধর্ষ প্রকৃতির হওয়ায় স্থানীয়রা তাদের কাছে অসহায় প্রতিটি আসর বসার সময় দুর থেকে একজন পাহাড়া দিয়ে থাকে। পুলিশ কিংবা অপরিচিত কেউ দেখলেই সে ফোন করে বলে দেয়। আর এতেই তারা কেটে পরে শাহপুর গ্রামের এক রাজনৈতিক নেতা বলেন, রাজনীতি করি বলে অনেক কথা মুখ ফুটে বলতে পারিনা কিন্ত বাস্তব চিত্র হচ্ছে, প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হচ্ছে এলাকার স্কুল-কলেজগামী ও উঠতি বয়সের ছেলেরা এসব খেলায় মেতে উঠেছে, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে মাদকেরও ভয়াবহ বিস্তার লাভ করেছে বেড়েছে বহিরাগতদের আনাগোনা।
এলাকার চিহ্নিত জুয়াড়িরা হাওরের নির্জনে গড়ে তুলেছে জুয়ার আসর ২০ থেকে ২৫ জন মিলে জটলা পাকিয়ে নিভয়ে চলছিল তাদের কার্যক্রম
এসব জুয়া বন্ধের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী, মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মুঠোফোনে জানান, গতমাসে ৮জন জোয়াড়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে তবে বাঘাসুরা ইউনিয়ন থেকে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি, পেলেই অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাছাড়া পাহাড়টি চুনারুঘাট থানার আওতাধীন থাকায় আমরা ধাওয়া দিলেই জুয়াড়ীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। তারপরও পুলিশ সদস্যরা এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে প্রায়ই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। করোনা সংক্রমণ, থেকে এলাকাবাসীকে সচেতন করার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিক কাজ করা হচ্ছে।