হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভা ও আশ-পাশের এলাকার পাঠকদের হাতে পৌঁছে দেয়া পত্রিকার হকাররা দীর্ঘ সময় ধরে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। বৈশি^ক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সংবাদপত্রের পাঠক কমে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন তারা।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহামারি করোনা ভাইরাস শুরুর আগে উপজেলার ২০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১৫ জন হকার প্রতিদিন ৫ হাজারের বেশি পত্রিকা বিলি করতেন। করোনা মহামারীর কারণে তা এখন দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩ হাজারে। অনেক কষ্টে পত্রিকার সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছেন হকাররা। যদিও সুদিনের অপেক্ষায় আছেন তারা। মাধবপুর বাসষ্ট্যান্ড পত্রিকা বিক্রেতারা জানালেন তাদের কষ্টের কথা, বর্তমান মহামারীর ছড়ানোর আতংকে বিভিন্ন সরকারি অফিস গুলোতে করোনা ছড়ানোর ভয়ে অনেকাংশে পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া স্কুল-কলেজ গুলো রয়েছে বন্ধ।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো সরকারি বিধি নিষেধ মেনে খোলা থাকলেও তারা আগের মত নিয়মিত পাত্রিকা রাখছেন না। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামালীগের সহসভাপতি মোঃ জাহেদ খান জানান, অনেক ব্যাংক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে এখনও পত্রিকায় রাখেনা। ব্যবসায়ীরাও দোকানপাটে পত্রিকা রাখেনা। বর্তমানে মাধবপুর শহরে দুই হাজার পত্রিকা কম চলে। আদাঐর গ্রামের পত্রিকা বিক্রেতা নিখিল দাশ বলেন, করোনার কারণে প্রতিদিন আমাদের পত্রিকা বিক্রি কমেছে। গত দেড় বছর আগে করোনা মহামারীর কারণে স্কুল কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ করে দেয় সরকার। সে সময় হকার ও পত্রিকার এজেন্টরা খুবই দুর্ভিসহ জীবনযাপন করেছে। পরবর্তীতে সিমিত আকারে খোলার পর থেকে অল্প সংখ্যক পত্রিকা বিক্রি হলেও তাতে চলছে না পত্রিকার বিক্রেতাদের সংসার। মাধবপুর উপজেলার পত্রিকার এজেন্ট শংকর দেবনাথ বলেন, মহামারী শুরুর পর থেকে অফিস গুলো প্রথম পর্যায়ে একেবারে পত্রিকা দেয়া কমিয়ে দেয়। পরে কিছু অংশে বৃদ্ধি করলেও পত্রিকা বিক্রি করে যে আয় হয় তা দিয়ে সংসারের খরচ, ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সরকারি ও বেসকারি ভাবে সে রকম কোন সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে সবাইকে পেশা পরিবর্তন করতে হবে। হবিগঞ্জ বিজয়ের প্রতিধ্বনি পত্রিকার মালিক মোঃ আনিছুর রহমান চৌধুরী রতন বলেন, করোনার প্রথম দিকে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। আস্তে আস্তে একটু স্বাভাবিক হওয়ার ফলে এখন কিছুটা পত্রিকা চলছে। আমরা চাইলেই এখন অন্য পেশায় যেতে পারছি না। আমাদের দিকে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পত্রিকা মালিকরা সুদৃষ্টি দিলে হয়তো আমাদের জীবন মান কিছুটা স্বাভাবিক হবে।