হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে ৬ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে ধর্ষণের ঘটনার মামলায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি।
সূত্রে জানা যায়, শনিবার (২১ আগস্ট) বিকাল ৩টায় বানিয়াচং উপজেলা সদরের ৪নং দক্ষিণ-পশ্চিম ইউনিয়ন এর অন্তর্গত যাত্রাপাশা গ্রামের মোতাহের মিয়ার ছেলে অলিম মিয়া (১৭) বিস্কিটের প্রলোভন দিয়ে ৬ বছর বয়সী প্রতিবেশি এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এসময় ওই শিশু কন্যার শোর চিৎকার শুনে তার মাতা ও ভাই আন্নর শাহ (৮) রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎস্যার জন্য ভিকটিমকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ ঘটনায় ভিকটিমের পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বানিয়াচং থানার মামলা নং-১০, তারিখ-২২/০৮/২১ খ্রিঃ, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৯(১) রুজু হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিমের শারীরিক সুস্থতার খোঁজখবর নেন এবং ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
পুলিশ সুপারের দিক- নিদের্শনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বানিয়াচং সার্কেলের তদারকিতে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরান হোসেন এর নেতৃত্বে বানিয়াচং পুলিশ টীম সর্বোচ্চ প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলসভাবে কাজ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ধর্ষক লম্পট অলিম মিয়াকে আজমিরীগঞ্জের জলসুখা বিরাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। ধর্ষক দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার হওয়ায় ভিকটিমের পরিবারসহ সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তদন্তকারি কর্মকর্তা ইতিমধ্যে ভিকটিমের পরনে থাকা রক্তমাখা কাপড়সহ অন্যান্য আলামত জব্দ করেছেন।
ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত ধর্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে এবং সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে হবিগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট মোঃ সুলতান উদ্দিন প্রধান এর আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে । মামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত সময়ে পুলিশ রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করে আসামীর দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি। এসময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
এদিকে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন যোগদানের পর থেকেই আইন শৃঙ্খলার প্রভূত উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। খুনের মামলার আসামী থেকে শুরু করে চুরি-ডাকাতি, মদ-জুয়া ও মাদকসেবীদের গ্রেফতারের পাশাপাশি গ্রাম্য দাঙ্গা নিরোধে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান করেছেন তিনি। এ ছাড়া বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেও ভূমিকা রাখছেন তিনি। এরই ফলশ্রুতিতে মোহাম্মদ এমরান হোসেন সম্প্রতি জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি নির্বাচিত হয়েছেন।