উজানের ঢল ও অতিবৃষ্টির কারনে বেশ কিছু দিন থেকে কুড়িগ্রাম জেলার বেশ কয়েকটি নদ নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য পরিবার।পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। চলমান বন্যায় কৃষকের স্বপ্ন সবজি ক্ষেত ও রোপা আমন আবাদ এখন হুমকির মুখে।
কদমতলা গ্রামের কৃষক মমিনুল ইসলাম জানান,বহু কষ্ট করে দুই বিঘা জমিতে আমন ক্ষেত করেছি।গত ৭ দিন যাবৎ পানির নিচে আছে।পানি সমানে বাড়তেছে।এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আমন ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাবে।
জীবিকার চর গ্রামে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,এ বন্যায় আমার এক একর পটল ক্ষেত তলিয়ে গেছে। করোনা মহামারীতে থেকে ঘুরে দাড়ানোর প্রচেষ্টাটা বন্যার জলে ডুবে গেল।এখন আমার কি হবে।
সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নে ১০ হেক্টর আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে।পানি বন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ।বন্যা দূর্ভোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মধ্যে আজ পর্যন্ত কোন আর্থিক সহায়তা দেয়া হয় নাই বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান,শুক্রবার সকালে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে বিপদ সীমার ৪৭সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দিকে ব্রহ্মপুত্র নদ নুনখাওয়া পয়েন্টে সকাল ৬ টা পর্যন্ত পানির সমতল ২৬.৪৯ মিটার; বিপদসীমার (২৬.৫০ মিটার) ০১ সেন্টিমিটার নিচে এবং ব্রহ্মপুত্র নদ চিলমারী পয়েন্ট -পানির সমতল ২৪.২০ মিটার; বিপদসীমার (২৩.৭০ মিটার) ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অপরিবর্তিত বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মন্জুরুল হক জানান, বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির রোপা-আমন, ২৮৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন সবজিক্ষেত ও ১১৫ হেক্টর জমির বীজতলা।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান,জেলায় বন্যা দূর্গতদের জন্য পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছ। ইতিমধ্যে ২৮০ মেট্রিকটন চাল,সাড়ে ১২ লাখ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।