November 23, 2024, 8:45 am
শিরোনাম:
শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক হিসেবে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন কক্সবাজারের নুরুল আফসার শিকদার মনোহরদীতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন মনোহরদীতে দিনব্যাপী পাট চাষী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বেধরক মারধরের অভিযোগ মনোহরদীতে জনমত জরিপ ও প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদ সরকার মনোহরদীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী “আলোকিত গোতাশিয়া” ফেসবুক গ্রুপের পক্ষহতে ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে অসহায়দের মাঝে শিল্পমন্ত্রীর ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ মনোহরদীতে ব্রহ্মপুত্র নদী থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে খননযন্ত্র ও বালুর স্তুপ জব্দ এতিম শিশুদের নিয়ে ইফতার করলেন মনোহরদীর ইউএনও হাছিবা খান

ময়মনসিংহের পাচটি উপজেলায় লাখ টাকার বাগান ছাগলের পেটে।

তাপস কর,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
  • 197 দেখুন

ময়মনসিংহের পাচটি উপজেলায় লাখ টাকার বাগান গেল ছাগলের পেটে। গৌরীপুরে শাহগঞ্জ মোড় থেকে ভোটের বাজার পর্যন্ত সুফল প্রকল্পের আওতায় স্ট্রিপ বাগানের লাখ টাকার গাছ সাবাড় করে দিচ্ছে ছাগল। আরও কয়েকটি উপজেলাতেও একই চিত্র।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে স্ট্রিপ বাগান সৃজন করা হয়। প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার গৌরীপুরে সাত কিলোমিটার, ঈশ্বরগঞ্জে ১৫ কিলোমিটার, ফুলপুরে ৩০ কিলোমিটার, হালুয়াঘাটে ২০ কিলোমিটার ও ধোবাউড়ায় ১৫ কিলোমিটার বাগান সৃজন করা হয়। সড়কে জারুল, চিকরাশি, আকাশমণি, আমলকী, হরীতকী, বহেরা, কাঁঠাল, জাম, নিম, তেঁতুল ইত্যাদি প্রজাতির গাছের চারা রোপণের কথা ছিল। প্রতি কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে এক হাজার চারা রোপণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা। গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও দেখভালের জন্য প্রতি দুই কিলোমিটার অংশের জন্য একজন পাহারাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই বছরের জন্য নিয়োগ করা পাহারাদার প্রতি কিলোমিটার গাছের দেখভালের জন্য তিন হাজার টাকা ভাতা পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে পাহারাদাররা এক বছরের ভাতার টাকা তুলেও নিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে সড়কের পাশে বাগানের চিত্র করুণ।

গাছগুলোর খুঁটি নষ্ট হয়ে গেলে পূনঃস্থাপন, পড়ে গেলে বেঁধে দেওয়া, গাছের গুঁড়ি, আগাছা পরিস্কার, ছাগলের হাত থেকে রক্ষা বা চারা নষ্ট হয়ে গেলে সেখানে পূনরায় চারা লাগানোর কথা পাহারায় নিয়োজিতদের। গৌরীপুর উপজেলার শাহগঞ্জ মোড় থেকে ভোটের বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়ক ঘুরে এসবের কিছুই দেখা যায়নি।
২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রকল্পের চারা লাগানো হলেও সবগুলোই নষ্ট হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। প্রতি কিলোমিটার ১৫ হাজার টাকায় সাত কিলোমিটার সড়কে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছিল বাগান করতে। কিছু গাছ মরে যাওয়া ও কিছু গরু-ছাগলের কবলে পড়ে নিঃশেষ হয়েছে। সব গাছের ‘অপমৃত্যু’ হওয়ায় সম্প্রতি সড়কজুড়ে পূনরায় নতুন চারা লাগানো হয়েছে। সেগুলোরও করুণ দশা। বিভিন্ন স্থানে নতুন লাগানো চারাগুলোও সাবাড় করে দিয়েছে ছাগল।
টাঙ্গাটিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর সিদ্দিক সড়কের পাশেই নিজের জমিতে ধানের চারা লাগাচ্ছিলেন। বন বিভাগের বাগানের বেহাল অবস্থায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, সবকিছুরই যত্ন লাগে। গাছের কোনো যত্ন নেয় না কেউ। মাঝে মাঝে পাহারাদার এলেও সঠিক তদারকি নেই। ছোট চারা হওয়ায় ছাগল সেগুলো খেয়ে ফেলছে। চারায় গোবর দিলে গাছগুলো নষ্ট হতো না। একই গ্রামের নুরুল আমীন ও আইয়ুব আলী বলেন, গত বছর লাগানো গাছের একটিও নেই। নতুন করে চারা লাগানো হলেও সেগুলো ছোট হওয়ায় কিছু মরে গেছে। কিছু ছাগলে খেয়ে ফেলছে। কিন্তু কেউ এসব দেখে না।
প্রায় অভিন্ন চিত্র অন্য উপজেলাগুলোতেও। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি গরুর হাট থেকে নান্দাইল সড়কে চার কিলোমিটার, গরুহাঁটা থেকে সুন্দাইলপাড়া নিভিয়াঘাটা মাদ্রাসা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার, সহিলাটি সড়কে চার কিলোমিটার, মৃগালী থেকে ফতেনগর সড়কে চার কিলোমিটার অংশে বাগান করা হয়। সোয়া দুই লাখ টাকা খরচে সৃজন করা বাগানে এক বছর বয়সী গাছের দেখা মেলা ভার। অথচ এই গাছগুলো দেখভালের জন্য প্রতি কিলোমিটার ৩ হাজার টাকা করে ১১ জনকে ভাতা দিচ্ছে সরকার। মৃগালী থেকে ফতেনগর সড়কে এলজিইডি রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে সব গাছ নষ্ট করে দিয়েছে বলে দাবি বন বিভাগের। অন্য সড়কগুলোতে মরে যাওয়া ও ছাগলে খেয়ে সাবাড় করে দিলেও বন কর্মকর্তাদের তৎপরতা নেই।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মাজহারুল হক বলেন, কিছু কিছু স্থানে গাছ খেয়ে ফেলায় ছাগল আটক করা হয়। পরে আলাপ-আলোচনা করে যাদের ছাগল গাছের ক্ষতি করেছে তারা নিজস্ব উদ্যোগে গাছ লাগিয়ে দিয়েছে। বাগানের দৈন্যদশ তারা কাটিয়ে উঠছেন। কয়েকদিনের মধ্যে পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবে।

বন বিভাগের গৌরীপুর রেঞ্জের কর্মকর্তা লুৎফুর রহমান বলেন, পাঁচটি উপজেলার মধ্যে গৌরীপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এখানে বাগানের পক্ষে-বিপক্ষে দুটি গ্রুপ রয়েছে। তিনি বলেন, বন বিভাগ একবার গাছ লাগিয়ে দেবে, যারা পাহারায় রয়েছে তাদের নিজ খরচে গাছের চারা লাগিয়ে দিতে হবে।

ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ কে এম রুহুল আমিন বলেন, যার দায়িত্বে থাকা অংশে চারা নষ্ট হয়েছে, তাকেই সে চারা শতভাগ লাগিয়ে বাগান বুঝিয়ে দিতে হবে। না হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর

https://bd24news.com © All rights reserved © 2022

Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102