হবিগঞ্জের মাধবপুরে দিন দিন বেড়েই চলছে অপমৃত্যু। একদিনে একাধিক মুত্যুর ঘটনাসহ অপমুত্যুতে যোগ হচ্ছে ভবিষ্যত সম্ভবনাময় শিশুরাও চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত মৃতের মধ্যে পুুরুষ ও নারীর পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে শিশুরা অপমৃত্যুর শিকার হচ্ছে।
বিভিন্ন এলাকার নির্ভরযোগ্য সূত্র এবং মাধবপুর থানায় রুজুকৃত অপমুত্যু মামলার পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত ৯ মাসে গলায় ফাঁস, বিষপান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, পানিতে ডুবে এবং অজ্ঞাত কারণে প্রায় অর্ধশত মৃত্যু হলেও সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ দিনে ৭ শিশুসহ ১১ জনের প্রাণহানী ঘটে।
১অক্টোবর উপজেলার আদাঐর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মসজিদের উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে হামদু মিয়া (২৬) নামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং ওই দিন উত্তর বেজুড়া গ্রামের ক্বারী আক্কাছ মিয়ার মাদ্রাসা পড়–য়া কন্যা হানিয়া আক্তার (৮) পুকুরে ডুবে মৃত্যু বরণ করে।
২৫ সেপ্টেম্বর ধর্মঘর ইউনিয়নের আহম্মদপুর গ্রামের মুসলিম মিয়ার (৬৯) গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
২৪ সেপ্টেম্বর উপজেলা ধর্মঘর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের প্রবাসী দুলাল মিয়া শিশু পুত্র মাহিন মিয়া (২) পুকুরের পানিতে পড়ে মৃত্যু হয়। ২২ সেপ্টেম্বর মীরনগর গ্রামের ইউসুফ মিয়ার ২ বছরের কন্যা মরিয়ম দুপুরে খেলতে গিয়ে ডোবায় পড়ে মারা যায়। ওইদিন বিকেলে হাড়িয়া গ্রামের ফয়সল মিয়ার ছেলে হাসান মিয়া (৫) খেলতে গিয়ে একটি পুকুরে পড়ে মারা যায়। ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার বাঘাসুরা ইউনিয়নের পুরাইকলা গ্রামের জমসেদ মিয়ার মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে রাকিবুল হাসান সজিব (১৩) কে ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
একই দিন বিকালে ধর্মঘর ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামের শাহ আলম মিয়ার তৃতীয় শ্রেণীতে পড়–য়া ছাত্র মোহন মিয়া (১১) পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায় ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বরগ গ্রামের প্রমোদ সরকারের ছেলে পরিমল সরকার (৩৩) টিনের চালা খুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর মাধবপুর পৌরশহরের ৩নং ওয়ার্ডে আটোরিক্সা চার্জ দিতে গিয়ে গ্যারেজ মালিক বারাচান্দুরা গ্রামের সুজন মিয়া (৩২) ও রিক্সা চালক চানখা বুল্লা গ্রামের সাহেদ মিয়া (৪০) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়।
১১-সেপ্টেম্বর পূর্ব মাধবপুর এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক লিটন পাঠানের, ছেলে ইয়াদুল ইসলাম বিজয় পাঠান (১২) রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং ১০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আন্দিউড়া ইউনিয়নের মীরনগর গ্রামের মাসুক মিয়ার ছেলে ইয়াছিন মিয়া (৮) মারা যায় এ বছরের মে মাসের ২৮ তারিখ সুরমা চা বাগান মাহজিলের মৃত বায়ামুন্ডার ছেলে লিটন মুন্ডা (৪৫) গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহটি উপ-পরিদর্শক (এস আই) ধ্রুবেশ চক্রবর্তীকে উদ্ধার করা হয়। ওই মাসের ২৪ তারিখে সুলতানপুর গ্রামের কুলেন্দ্র সরকার স্ত্রী মীনা রানী সরকার (৩০) গলায় ফাঁস দেওয়ায় মাধবপুর উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এস আই এনামুল হাসান ওই লাশ উদ্ধার করে থানায় অপমৃত্যুর মামলা রুজু করেন এবং ৮ মে তেলিয়াপাড়া চা বাগান মিশন লাইন এলাকার সমেয়া মুর্মুর কন্যা রবিনা মুর্মু (১৮) নির্মাণাধীন দালান ধ্বসে মারা গেলে এস আই মো.জাকারিয়া লাশ উদ্ধার করে ৮/৫/২১ তারিখে অজ্ঞাত মামলা নং ১২ রুজু করেন। ৩১ মে জগদীশপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. হালিমা বেগম (৫৯) এর গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ এস আই এনামূল হাসান একটি নির্মাণাধীন ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার করেন। অপমৃত্যু মামলা নং ১৫ রুজু হয়।
২৯ এপ্রিল এস আই ধ্রুবেশ চক্রবর্তী তেলিয়াপাগাস্থ ফারইস্ট কোম্পানীর সামনে মেইন রাস্তার পাশে ধানী জমি থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির হাত উদ্ধার করে অপমৃত্যু মামলা নং ১১ রুজু করা হয়। ৮ এপ্রিল দক্ষিন সুরমা গ্রামের লাল মিয়া (৫৫) বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। ওই দিন দুপুরে মাধবপুর পৌরশহরের কাটিয়ারার তমাল চক্রবতির স্ত্রী কাবেরী চক্রবর্তি কেয়া (২১) ঘরের ভীমের সঙ্গে এবং বহরা ইউনিয়নের পানিহাতা গ্রামের পিতামৃত ফজলু মিয়া ছেলে রফিক মিয়া (৪৫) আম গাছের ঢালে ওড়নায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
এ সংক্রান্ত ৮/৪/২১ তারিখে মাধবপুর থানায় অপমৃত্যু রুজু হয়। ২ এপ্রিল বৈকণ্ঠপুর চা বাগান এলাকার ১৮ নং সেকশন থেকে অজ্ঞাত আনমানিক বয়স ৫৫ এর একটি মৃতদেহ এস আই আব্দুল ওয়াহেদ গাজী উদ্ধার করে ওই তারিখে থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়
এ বিষয়ে মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন আস্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুবরণকারীদের যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ হস্তান্তর করা হয় ময়নাতদন্তে যদি কারো দ্বারা মৃত্যু হয়েছে এরকম প্রতিবেদন পাওয়া যায় তাহলে হত্যা মামলা রুজু করা হয়।