কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কুরআন শরীফ অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৩ অক্টোবর রাতে কুড়িগ্রামের উলিপুরে কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। যেখানে প্রতিমা ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটে। উলিপুরের সেসব ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির পরিদর্শন করেছেন রাজশাহী রেঞ্জের দায়িত্বে থাকা ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে উলিপুরের গুনাইগাছ ইউনিয়নের পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণপাড়া সার্বজনীন মন্দির, নেফরা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙা সার্বজনীন দেবী মন্দির এবং থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পরিদর্শন করেন তিনি।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উলিপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে (গবা), উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু, কুড়িগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক উদয় শংকর চক্রবর্তী, উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জসহ আরও অনেকে।
এ সময় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার হামলার শিকার মন্দিরগুলোর কমিটির সঙ্গে এবং ভুক্তভোগী মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। তবে তিনি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উলিপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে জানান, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার ঘটনাস্থলের সার্বিক পরিস্থিতি এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দেখার জন্য উলিপুরে আসেন।
১৩ অক্টেবর রাতে উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের পশ্চিম কালুডাঙ্গা ব্রাহ্মণপাড়া দুর্গামন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, পশ্চিম কালুডাঙ্গা গোবিন্দ মন্দির, নেফড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির ও থেতরাই ইউনিয়নের হোকডাঙ্গা ভারতপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির এবং ১৫ অক্টোবর রাতে বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের একটি দুর্গা মন্দিরসহ ৮টি মন্দিরে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে মন্দিরসহ প্রতিমা ভাঙচুর, মন্দিরে অগ্নিসংযোগ ও মন্দির সংলগ্ন বাড়িঘর ভাঙচুর এবং লুটপাট করে।
এসব ঘটনায় পৃথক ৫টি মামলা হয়েছে। মামলায় প্রায় ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে ২৭ জনকে গ্রেফতার করেছে উলিপুর থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুর্গা মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হওয়া পৃথক ৫টি মামলার মধ্যে একটি মামলা করেছে মন্দির কমিটির সভাপতি। এ ছাড়া বাকি ৪টি মামলার বাদী পুলিশ। এর মধ্যে তিনটি মামলায় প্রধান আসামি উপজেলা ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সভাপতি আবু সাঈদ সুমন পলাতক রয়েছেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে বিভিন্ন ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে ২৭ জন দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে উলিপুর থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির জানান, এখন পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ ও বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।