কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় দুধের শিশুকে কেন্দ্রের বাহিরে রেখে এসএসসি পরিক্ষা দিলেন মায়েরা। উপজেলার থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের মুল ফটকের বাইরে আত্মীয় স্বজনের কাছে বুকের দুধের শিশুদের রেখে পরিক্ষা দিলেন ওই শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে ওই কেন্দ্র গেলে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
দেড় মাস বয়সি শিশু জয়নাল আবেদীন ফাহিম নামে শিশুকে কোলে নিয়ে অপেক্ষারত আত্মীয় বলেন, ওর মায়ের নাম ফুলজান। কয়ার পাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। দু বছর আগে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরের হাট এলাকায় তার বিয়ে হয়।
আল আমিন নামে আরেক শিশুকে কোলে নিয়ে অপেক্ষারত তার নানী বলেন, ৭ম শ্রেণী পড়াবস্থায় তার মেয়ে সুমির বিয়ে হলেও গত ১৫ দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করে। চিলমারী ইউনিয়নের চর শাখাহাতি এলাকায় বাড়ী হলেও থানাহাট এ ইউ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তার মেয়ে পড়া লেখা করেছেন বলেও জানান তিনি।
তারা আরও জানান, এ কেন্দ্রের ফটকে তাদের মতো আরও কয়েকজন রয়েছেন নবজাতক সন্তান নিয়ে। তারা সবাই অপেক্ষা করছে সন্তানের মায়ের জন্য।
শরীফের হাট এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে শিখা আক্তার নামে এক পরিক্ষার্থী দু’দিন আগে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেছেন। মা ও সন্তান বর্তমানে ভালো আছেন। সন্তানকে বাড়ীতে রেখে মা পরিক্ষা দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পরিক্ষা কক্ষের দায়িত্বরত কয়েকজন শিক্ষক বলেন, করোনাকালিন সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় অনেকে মেয়ে শিশুর বিয়ে হয়েছে। এদের অনেকেরও কোল জুড়ে সন্তান এসেছে। এজন্য অভিভাবক, ইমাম ও কাজীরা দায়ী বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে চিলমারী উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমীক সুপার ভাইজার আব্দুল হালিম বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা পরিবেশ পরিস্থি ও আর্থিক দৈন্যতার কারণে তাদের মেয়ে শিশুদের বিয়ে দিয়েছেন। আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা মূলক কাজ করছি আগামীতে যাতে এ ধরণের ঘটনা না ঘটে।