ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রতিপক্ষের মারপিটের আঘাতে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২ ঘন্টা ব্যাপী সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা ঘটনার সঠিক ভাবে তদন্ত করে দোষিদের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ করেন। এত করে নিহতের এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহতের স্বজন মোহাম্মদ আলী জানান, গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে উত্তর রাবাইটারী বটতলা বাজারে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এক পযার্য় ওই ওয়ার্ডে তালা প্রতীকের প্রার্থী শাহজালাল নিজেই বৈদুতিক ফ্যান প্রতীক মুকুল মিয়ার কমর্ী বাবুল মিয়া (৪০)কে গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে বাবুল মিয়াকে রাস্তা থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসে শাহজালাল আলীর লোকজন। পরে ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী সড়কে বটতলা বাজারে চায়ের দোকানের গাছের ডাল ও খড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট ও কিলঘুষি মারে। তাদের এলোপাতারী মারপিটের দৃশ্য দেখে ভয়ে আত্বগোপন করে ফ্যান প্রতীকের অন্যান্য কর্মীরা। পরে আহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে লোকজন ছুটে এসে বাবলু মিয়াকে উদ্ধার করে নাগেশ্বরী শাপলা ক্লিনিকে ভর্তি করায়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে মঙ্গলবার বাড়ীতে আসলে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত বাবলু মিয়া উত্তর রাবাইটারী গ্রামের মৃত আজগার আলীর ছেলে। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নারী পুরুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। ঘটনার মীমাংশার জন্য ওই রাতে দফায় দফায় বৈঠক চলে নিহতের বাড়ীতে। পুলিশ ও প্রশাসন ছুটে যান নিহতের বাড়ী। পরিবারের লোকজন লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসনও লাশ উদ্ধার না করে পরিবারকে দিয়ে চলে আসে।
বুধবার এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে লাশ দাফন না করে লাশ নিয়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। রাস্তায় বাশ দিয়ে বন্ধ করা হয় যানবাহন। দুই ঘন্টা ব্যাপী উপজেলার রাবাইটারী এলাকার ফুলবাড়ী-নাগেশ্বরী সড়কে পথচারী ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রট ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের দাবী শোনার পর অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ফুলবাড়ী থানায় নিয়ে আসে।
ফ্যান প্রতীকের প্রার্থী মুকুল মিয়া জানান, ২৮ নভেম্বর আমাদের ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সে জন্য আমরা প্রচারপ্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছি। হঠ্যাৎ করে আমার নিরপরাধ কর্মীকে মারপিট করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
আমি নিহতের স্ত্রী মমতা বেগম জানান, রাতে লাশ দাফনের জন্য আমাকে চাপ দেয়া হয়েছে। সে জন্য ঝামেলায় না গিয়ে লাশ দাফনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সকাল বেলা পরিবারের লোকজন সঠিক বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন। আমি এখন সঠিক বিচার চাই।
নাগেশ্বেরী বি-সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার সুমন রেজা জানান, মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবতর্ীতে আইনাগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিমল চাকমা জানান, খবর পেয়ে পুলিশসহ নিহতের বাড়ীতে যাওয়া হয়। স্বজনরা কোন অভিযোগ না করে লাশ দাফনের অনুরোধ জানান। কিন্তু মঙ্গলবার পুনরায় বিচার চেয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের দাবী শুনার পর লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। মেডিকেল রির্পোট পাওয়ার পর পুলিশ ব্যবস্থ্যা নিবেন বলে জানান তিনি।