মহেছেনা( ৬১)বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে।স্বামী পরিত্যাক্তা বৃদ্ধা মহেছেনা ওই গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী।স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ায় সংসারে অভাব অনটনে অসহায় জীবন যাপন করছেন এই ষাটোর্ধ নারী। থাকার ঘর না থাকায় এই শীতে ছোট ছেলের গোয়াল ঘরে নাতি (বড় ছেলের সন্তান) সহ দিনানিপাত করতেন তিনি। এ নিয়ে গত ২৫ জানুয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।সেই প্রতিবেদন নজরে আসলে ওই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছেন র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন, র্যাব-১৩ রংপুর। বাহিনীটির পক্ষ থেকে মহেছেনাকে সম্পূর্ণ নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার সাথে শীত নিবারনের জন্য কিছু শীতবস্ত্র দেয়া হয়।
শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ঘর নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৩, রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ।
র্যাব-১৩, রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাহমুদ বশির আহমেদ বলেন, “ছেলের গোয়াল ঘরে বৃদ্ধা মায়ের বসবাস’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা আমাদের অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেদৌসের নজরে আসে। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে ভুক্তভোগীর বাড়িতে লোক পাঠান। সবকিছু জানার পর বাহিনীর পক্ষ থেকে ওই নারীকে সম্পূর্ণ নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তাঁর কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।”
মহেছেনার বাড়িতে ঘর নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন র্যাব-১৩ এর ডিডি মজুন শেখ। তিনি বলেন,‘ মহেছেনাকে ২২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের সম্পূর্ণ নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সিমেন্টের খুঁটি ও টিন দিয়ে এই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা তাঁকে শীতবস্ত্র হিসেবে দুটি কম্বলও দিয়েছি। ঘর আর কম্বল পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন মহেছেনা।’
গোয়াল ঘর থেকে সম্পূর্ণ নতুন টিনের ঘর পেয়ে র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশের সাথে বাহিনীর জন্য দোয়া করেছেন মহেছেনা। তিনি জানান, এত দ্রুত সময়ে তাঁর ভাগ্যে নতুন ঘর জুটবে তা তিনি কল্পনাও করতে পারেননি। র্যাবের জন্য প্রাণ ভরে দোয়া থাকবে তাঁর।
মহেছেনা বলেন,মুই খুব খুশি বাবা। র্যাব মোর কষ্ট দূর করিল। এই শীতত নাতিক নিয়া এখনা আরামে থাকপার পাইম। আল্লাহ তোমার সবার গুলার ভাল করুক।’
মহেছেনার জন্য ঘর তৈরি জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সংগঠক মারুফ আহমেদ। তিনি র্যাবের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এটা অসাধারণ একটি উদ্যোগ। কোনও অসহায়ের পাশে এভাবে দাঁড়ানোটা নি:সন্দেহে মানবিকতার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। ওই নারীর দীর্ঘ দিনের কষ্ট মাত্র দুই দিনে দূর হলো। র্যাবের জন্য শুভ কামনা।’ মহেছেনা ও নাতির জন্য বিভিন্ন সুহৃদের দেওয়া অর্থ দিয়ে তাদের (মহেছেনা ও তার নাতির )অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো হবে বলেও জানান সংগঠক মারুফ আহমেদ।