জীবনের গতি ডানা মেলেছিল রেসিং ট্র্যাকে। গাড়ি নিয়ে গতির ঝড় তুলে ভালোই নামডাক কামিয়েছিলেন রেনে গ্রেসি। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পূর্ণকালীন নারী সুপার কারচালক হিসেবে তো ইতিহাসেই জায়গা করে নেন!
তবে রেসিং ট্র্যাকের বিশাল খরচের বোঝা বয়ে বেড়ানো সম্ভব হয়নি। অভাব এসে একসময় সেই ডানা কেটে দেয়। স্বপ্ন বনাম সংগতির লড়াইয়ে জয়ী হয় প্রয়োজনের তাগিদ। করতে হয় পেশা বদল। জড়িয়ে পড়েন পর্নোজগতে।
পরিবার চালানোর ভার নিজের কাঁধে তুলে নিতে ২০১৯ সালে যৌন পেশায় নাম লেখান গ্রেসি। গত তিন বছরে পর্নোগ্রাফির নেশায় গতির ঝড় ভুলেছেন এই লাস্যময়ী।
৩ লাখ ৫০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারে (২২ কোটি টাকারও বেশি) নিজের প্রিয় মার্সিডিজ সুপার কার বিক্রি করে পর্নো ইন্ডাস্ট্রিতে নাম লেখান গ্রেসি। শুরুর দিকে ‘অনলি ফ্যানস’ নামে একটি অ্যাডাল্ট ওয়েবসাইট থেকে ভিডিও কনটেন্ট আপলোড করতেন তিনি। সে সময় জানিয়েছিলেন, রেসিংয়ের প্রতি তাঁর আবেগ আর কাজ করে না।
রেসিংয়ের পর পর্নোজগতেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ২৭ বছর বয়সী গ্রেসি। পেশাগত কারণে নিজের জন্মশহর ব্রিসবেন ছেড়ে থাকতে হচ্ছে ‘পাপের নগরী’তে। যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাস শহর তো এই নামেই পরিচিত।
যৌন পেশায় জড়িয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা কামিয়েছেন গ্রেসি। তবে মনে শান্তি নেই। এ নিয়ে এখন অনুতপ্ত তিনি, ‘আমার কাছে মানসিক স্বাস্থ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটা (যৌনবৃত্তি) আমার জীবনে প্রভাব ফেলছে। এই মুহূর্তে এমন কিছু করতে চাইছি, যা নিরাপদ ও ভারসাম্যপূর্ণ হবে।’
পর্নোশিল্পে আর মন টিকছে না গ্রেসির। আর্থিক সচ্ছলতা ফেরায় এসব ছেড়ে আবার স্টিয়ারিং ধরতে চান তিনি, ‘আমি রেসিং ট্র্যাকে ফিরতে চাই। মনে হয় এটাই আমার সঙ্গে মানানসই। যাঁদের চাওয়ায় রেসার হয়েছিলাম, যাঁরা আমার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন; তাঁরা চাইলে কেন নয়?’
পর্নো তারকা হওয়ার পর থেকে সপ্তাহে ১৬ লাখ টাকার মতো উপার্জন করছেন গ্রেসি। সেই টাকা দিয়ে একটি রেসিং টিম তৈরির ইচ্ছে আছে তাঁর। তবে রেসিং কর্তৃপক্ষ একজন পর্নো তারকাকে মেনে না-ও নিতে পারে। সামনের এই কঠিন লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত তিনি, ‘অস্ট্রেলিয়া হোক কিংবা বিদেশ—যেখান থেকেই আমাকে স্বাগত জানানো হোক, ফিরব।’
যদিও ভেতরে ভেতরে ভয়ও কাজ করছে গ্রেসির, ‘একজন নারী হিসেবে বুঝতে পারছি, আমি সবার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছি। ওরা (অন্য চালকেরা) আমার ওপর হামলে পড়তে পারে। আমার গাড়ি ট্র্যাক থেকে ছিটকে ফেলে দিতে পারে। জনগণ আমাকে জ্বালাতন করতে শুরু করবে। আমাকে তাই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে, ফিরলে কোন ক্যাটাগরিতে অংশ নেব।’