কথায় আছে প্রেম মানে না জাত-কুল, মানে না বয়স। ঠিক তেমনি এক ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলে। তরুণীর প্রেমে ব্যাকুল আরেক তরুণী। নোয়াখালীর নুরুল ইসলামের মেয়ে বিলকিস ভালোবাসার টানে টাঙ্গাইলের মেয়ে আখির কাছে ছুটে এসেছেন। ফেসবুক-টিকটকে পরিচয়, এরপর তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বলে জানান দুজনেই।
এলাকাবাসী বিষয়টি ভিন্ন চোখে দেখলেও শিক্ষাবিদরা বলছে-এটা তেমন কোনো সমস্যা না। সব সময় যে আকর্ষণ থাকবে তাও না। এটা একটি সাময়িক আকর্ষণ।
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ময়থা গ্রামের আজহার আলীর মেয়ে ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া আখি। তার প্রেমে পাগল হয়ে নোয়াখালী থেকে টাঙ্গাইল চলে এসেছেন নুরুল ইসলামের মেয়ে বিলকিস আক্তার।
জানা যায়, ফেসবুকে ও টিকটকে পরিচয় তাদের তারপর দীর্ঘদিন যাবত কথা হয় হোয়াটসঅ্যাপ বলেন তারা। জরিয়ে যায় গভীর সম্পর্কে। তারপর চলে দুজনের প্রেমের আলাপন। এলাকাবাসী বলছেন, তাদের এই কাহিনি কখনো দেখিনি, আজ প্রথম দেখলাম বিষয়টি আসলেই অবাক করার মতো।
ময়থা গাছপাড়া এলাকার ছিয়াম নামে একজন বলেন, ‘জীবনে প্রথম এই রকম ঘটনা দেখলাম, এর আগে কোনোদিন দেখি নাই, বিষয়টি দেখে খুব অবাক হলাম।’
৭০ বছর বয়সের আঙ্গুর নামে একই এলাকার একজন জানান, এই বয়সে এই রকম ঘটনা এই প্রথমবার দেখলাম। মেয়ে মেয়ে সম্পর্ক কোনোদিন দেখি নাই, একজন অরেকজনকে ছাড়া বাঁচবে না বিষয়টা আসলেই রহস্যজনক।’
আখির মা জোৎসা বেগম বলেন, ‘অনেক আগে থেকে না করছিলাম। এর আগে ঢাকা চলে গিয়েছিল তারপর দুজনকে আলাদা করে রাখছিলাম। পরে এখন আবার চলে এসেছে। তাদের এই সম্পর্কের কারণে সারা দিন মানুষ বাড়িতে ভীর জমাচ্ছে।’
নোয়াখালী থেকে আসা বিলকিস বলেন, ‘আমি পরিবারকে বুঝিয়েছি। তারা আমাদের সম্পর্ক মানবে না, তাই নিরুপায় হয়ে পালিয়ে এসেছি। এখন আখির পরিবার না মানলে আমরা দুজনে অন্য কোথাও গিয়ে বসবাস করব।’
টাঙ্গাইলের মেয়ে আখি বলেন, ‘বিলকিসের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়, তারপর থেকে আমরা দুজনে সম্পর্কে জড়িয়ে যাই। এখন বিলকিস এসেছে, আমি ওরে আর যেতে দিব না। বাঁচলে এক সঙ্গে বাঁচবো মরলে এক সঙ্গে মরবো।’
টাঙ্গাইলের মাহমুদুল হাসান কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক বি এম দিপক পাল বলছেন, ‘সব সময় যে মেয়েদের আকর্ষণ থাকবে তা নয়। যেকোনো সময় তাদের এই মানসিকতা পরিবর্তন হতে পারে। তাদের দুজনের মাঝে এই রকমটাই হয়েছে, সাময়িক একটা বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে।’
বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ময়থা এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য স্বপন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি গেছিলাম সেখানে। পরে দেখি নোয়াখালী থেকে একটি মেয়ে এসেছে, তারপর তাদের কথা শুনে বুঝলাম যে তারা একে অপরকে ভালোবাসে। এখন তো মেয়ে মেয়ে এ ধরনের সম্পর্ক হতে পারে না। কিন্তু দুজনেই বলছে-একে অপরকে ছাড়া বাঁচবে না, তাই ওরা যেনো কোনো প্রকার সমস্যা না করে সে জন্য তাদের পাহাড়া দিতে গ্রাম পুলিশ রাখা হয়েছে। নোয়াখালী থেকে যে মেয়েটি এসেছে, তার বাড়িতে ফোন করা হয়েছে। তারা আসলে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা পারভীন বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান বিষয়টি জানিয়েছে, নেয়াখালীর প্রসাশনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। বিলকিসের পরিবার আসলে তাকে তাদের হাতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যদি না আসে তাহলে আইনের আশ্রয় নেব।