রাজশাহী নগরীতে তালাবদ্ধ আবাসিক হোটেল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার আবাসিক হোটেল ‘ড্রিম হ্যাভেন’ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত নারীর নাম জয়নব বেগম (৪২)। তার বাড়ি নাটোর সদর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামে। বাবার নাম তসির প্রামাণিক।
জানা গেছে, রবিবার সকাল ১০টার দিকে মিজান (৪০) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলটিতে উঠেন জয়নব বেগম। তবে হোটেল রেজিস্ট্রারে তার নাম উল্লেখ রয়েছে জুলেখা (২৭)। ঠিকানা দিয়েছিলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী। পরে ব্যাগে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্রে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
হোটেলটির ব্যবস্থাপক সামিউল হাসান বলছেন, ‘চিকিৎসা করতে শহরে আসার কথা জানিয়ে তারা রবিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে হোটেলে উঠেছিলেন। এক হাজার টাকা ভাড়ায় তারা একটি এসি কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে সঙ্গে থাকা ব্যক্তি বের হয়ে যান। ইফতারের পর হোটেলের কক্ষগুলো চেক করার সময় দেখা যায়, ৪০৩ নম্বর কক্ষটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ, কিন্তু ভেতরে এসি চলছে। তখন অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ সময় হোটেলের খাতায় দেওয়া মোবাইল নম্বরটিতে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর রাত ৯টার দিকে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। রাজপাড়া থানার পুলিশ এসে দরজার তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বিছানায় ওই তরুণীর মরদেহ দেখতে পায়।’
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘হোটেলটির ৪০৩ নম্বর কক্ষে ওই নারীর মরদেহ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর পুরুষ সঙ্গী কক্ষের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে পালিয়েছে। মরদেহ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়েছে। পলাতক ওই পুরুষকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে তারা হোটেলে উঠেন। হোটেল রেজিস্ট্রারে নিজেদের মিথ্যা নাম-পরিচয় ব্যবহার করেছিলেন তারা। দুপুরের দিকে হোটেল কর্মীরা বাইরে থেকে কক্ষের দরজা তালাবদ্ধ পান। রাতেও কোনও সাড়া না পেয়ে থানায় খবর দেন। পুলিশ গিয়ে রাত ১১টার দিকে ওই কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। রাতেই মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।’ এ নিয়ে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান ওসি।