ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতা মানহানির মামলা দায়ের করেছেন । প্রায় দুই বছর আগে প্রণয়ন করা
রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির
স্বাধীনতাবিরোধীদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা প্রশাসনিক কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গিয়ে পৌঁছে,২৪ জনের ওই তালিকায় নাম রয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পৌরসভার সভাপতির বাবার নাম। এরই জেরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই তালিকায় স্বাক্ষর করা তিন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গত বুধবার আদালতে মানহানির মামলা দায়ের করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী রফিকুল ইসলাম বুলবুল। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা,সমালোচনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সকালে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মামলাটি দায়ের করা হয়েছে জেলার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪ নম্বর আমলি আদালতে। মামলার আসামিরা হচ্ছেন,ঈশ্বরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল হক, সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হাই ও সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান আকন্দ এবং আমাদের কণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোজারুল ইসলাম এবং পত্রিকাটির ময়মনসিংহ প্রতিনিধি মো.শহীদুল ইসলাম। মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মামলা দায়েরের খবর পেয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ। তিনি বলেন,আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো,অর্ডিনেটর মো.হান্নান খান (পিপিএম) ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কাছে একটি চিঠি পাঠান। সেই চিঠিতে জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্য এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের পূর্ণাঙ্গ নামের তালিকা পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আকন্দ আরো জানান,ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ঈশ্বরগঞ্জের তৎকালীন ইউএনও মো.জাকির হোসেন ২০২০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তালিকা চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবদুছ সাত্তারও তাকে চিঠি পাঠান। তিনি সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তার কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা প্রণয়ন করে ইউএনও কার্যালয়ে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর ওই তালিকার কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। হাবিবুর রহমান আফসোস করে আরো বলেন, রাষ্ট্রের নির্দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শান্তি কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা করে আসামি হয়েছি। এ সময় তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় এখনো বয়স্ক লোকজন বেঁচে আছেন। তাদের জিজ্ঞেস করে দেখুন, দুই আওয়ামী লীগ নেতার বাবা শান্তি কমিটির সদস্য থাকার সত্যতা পাবেন।