বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে চেতনানাশক খাইয়ে মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বৃষ্টি আকতার (২০) নামে এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছে।
রোববার রাতে তাকে বগুড়া সদরের তেলধাপ গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ছিনতাই করা মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।
বৃষ্টি আকতার সোমবার রাতে শিবগঞ্জের আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে শিবগঞ্জ থানার ওসি দীপক কুমার দাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বগুড়া সদরের দাড়িয়াল গ্রামের আবদুল ওয়াহাব কিছুদিন আগে লটারিতে একটি অ্যাপাচি ফোরভি ১৬০ সিসি মোটরসাইকেল পান। তিনি ও তার ছেলে রবিন (১৬) মোটরসাইকেল চালান। পার্শ্ববর্তী নুনগোলা ইউনিয়নের তেলধাপ গ্রামের সিরাজুল ইসলাম সেতু ওই মোটরসাইকেল ছিনতাই করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুসারে তিনি কিশোর রবিনের ফোন নাম্বার সংগ্রহ করে স্ত্রী বৃষ্টি আকতারকে দেন। সেতু তার স্ত্রীকে রবিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতে বলেন।
স্বামীর পরামর্শে তিনি (বৃষ্টি) রবিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার পর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বৃষ্টির ডাকে সাড়া দিতে রবিন মোটরসাইকেলে তার বন্ধু নিরবকে নিয়ে গত ৯ আগস্ট দুপুরের পর শিবগঞ্জ উপজেলার ভাসুবিহারের নরপতির ধাপ এলাকায় যান। বৃষ্টি ও রবিন নির্জন স্থানে বসে গল্প শুরু করেন।
সুযোগ বুঝে বৃষ্টি মোবাইল ফোনের মেসেজ দিয়ে স্বামী সেতুকে তাদের অবস্থান জানিয়ে দেন। বৃষ্টি সঙ্গে আনা চেতনানাশক মেশানো কোমলপানীয় খাওয়ালে রবিন অসুস্থতাবোধ করেন। এ সময় বৃষ্টির স্বামী সেতু ও তার এক সহযোগী সেখানে আসেন। তারা প্রেম করার অপরাধে রবিনকে মারপিট করেন। বন্ধু নিরবকে তাড়িয়ে দিয়ে রবিনকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান। কিছুদূর গিয়ে ফাঁকা স্থানে গিয়ে তাকে মারপিট করে ফেলে দিয়ে সেতু মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান।
রবিনের মা রোজিনা আখতার গত রোববার থানায় সেতু, তার স্ত্রী বৃষ্টি ও অজ্ঞাত সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
শিবগঞ্জ থানার ওসি দীপক কুমার দাস জানান, তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বৃষ্টি আকতারের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর গত রোববার রাতে বগুড়া সদরের নুনগোলা ইউনিয়নের তেলধাপ গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার স্বামী সেতু পালিয়ে যান। পরে বৃষ্টির কাছ থেকে রবিনের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া বৃষ্টির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার একটি গ্রামে সেতুর বন্ধুর বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, বৃষ্টিকে সোমবার রাতে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আসামি সেতু ও তার সহযোগীকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।